ইরান, বাঙ্কার-বাস্টার, বি-২-বোমারু-বিমান

আকাশে উড়াল দিলো ইরানের পারমাণবিক স্থাপনা ধ্বংসে সক্ষম ৬ মার্কিন যুদ্ধবিমান

ইরান-ইসরাইল উত্তেজনার মধ্যে ছয়টি মার্কিন বি-২ স্টিলথ বোমারু বিমান আকাশে উড্ডয়ন করেছে। বিমানগুলো মিসৌরির হোয়াইটম্যান বিমান বাহিনী ঘাঁটি আকাশে উঠে প্রশান্ত মহাসাগরীয় দ্বীপ গুয়ামে অবস্থিত একটি মার্কিন বিমান বাহিনী ঘাঁটির দিকে যাচ্ছে।

মার্কিন বিমান ট্র্যাফিক ট্র্যাকিং ডেটা এবং বিমান ট্র্যাফিক কন্ট্রোলারদের সূত্রে আমেরিকান গণমাধ্যম এই তথ্য জানিয়েছে।

ফক্স নিউজের মতে, বি-২ বোমারু বিমান দুই টনের বাঙ্কার-বাস্টার বোমা বহন করতে পারে। এটি শুধু মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কাছেই আছে। এই অস্ত্র ইরানের রাজধানী তেহরানের দক্ষিণে অবস্থিত ফোরদো পারমাণবিক স্থাপনাসহ ইরানের সবচেয়ে সুরক্ষিত পারমাণবিক স্থাপনাগুলোকে ধ্বংস করতে সক্ষম বলে মনে করা হচ্ছে।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সম্প্রতি বলেছেন, ‘তিনি এই সঙ্ঘাতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের হস্তক্ষেপ বিষয়ে অবস্থান স্পষ্ট করবেন।’ তবে যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে আজ পর্যন্ত মার্কিন প্রতিরক্ষা বিভাগ বোমারু বিমানের মিশন বা এই অঞ্চলের বর্তমান ঘটনাবলীর সাথে এর সম্ভাব্য সংযোগ সম্পর্কে কোনো আনুষ্ঠানিক মন্তব্য করেনি।

ফোরডো স্থাপনা ধ্বংস : সিদ্ধান্ত ওয়াশিংটনের হাতে

কোম শহরের কাছে ইরানি পাহাড়ের গভীরে অবস্থিত ফোরডো পারমাণবিক স্থাপনা তেহরান এবং তেল আবিবের মধ্যে ক্রমবর্ধমান উত্তেজনার অন্যতম প্রধান প্রতীক হয়ে উঠেছে। দুই পক্ষের মধ্যে বিস্ফোরক যুদ্ধের মধ্যে এটি এখন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মুখোমুখি হওয়া দুর্ভাগ্যজনক সিদ্ধান্তের কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে।

এই স্থাপনাটি ২০০০ সালের শেষের দিকে কোম থেকে ৩০ কিলোমিটার উত্তর-পূর্বে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। সম্ভাব্য সামরিক হামলা থেকে রক্ষা করার জন্য একটি পাহাড়ের ভেতরে তা নির্মিত হয়েছিল।

আন্তর্জাতিক পারমাণবিক শক্তি সংস্থার প্রতিবেদন অনুসারে, ফোরডোতে ১,০০০টিরও বেশি উন্নত সেন্ট্রিফিউজ রয়েছে। এগুলো পারমাণবিক অস্ত্রের জন্য প্রয়োজনীয় স্তরের কাছাকাছি ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করতে ব্যবহৃত হয়।

ভূতাত্ত্বিক গভীরতা এবং স্থাপনার চারপাশের কংক্রিট দুর্গের কারণে এটি যেকোনো প্রচলিত সামরিক আক্রমণের জন্য অত্যন্ত কঠিন লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হয়েছে।

সাম্প্রতিক দিনগুলোতে ইরানের অন্যান্য পারমাণবিক স্থাপনাগুলোতে ধারাবাহিক বিমান হামলা চালিয়েছে ইসরাইল। ফোরদোতে হামলা চালানোর সামরিক সক্ষমতা তাদের নেই। কারণ এই সুরক্ষিত স্থানে প্রবেশের জন্য প্রয়োজনীয় অস্ত্রের অভাব রয়েছে ইসরাইলের।

অতএব, মার্কিন জিবিইউ-৫৭ বাঙ্কার-বাস্টার বোমা, যার ওজন প্রায় ৩০ হাজার পাউন্ড এবং শুধুমাত্র বি-২ বোমারু বিমান যাকে বহন করতে পারে, কার্যকরভাবে ফোরদো স্থাপনা ধ্বংস করার একমাত্র বিকল্প। যেহেতু ইসরাইলের কাছে এই বোমারু বিমান বা এই বোমাগুলো নেই, তাই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত ওয়াশিংটনের উপর নির্ভর করে।

সূত্র : স্কাই নিউজ

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *


Scroll to Top