টুডেনিউজ ডেস্ক
সম্প্রতি ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় মার্কিন হামলা এবং এর পাল্টা হামলায় মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনা চরমে পৌঁছালেও নিউ ইয়র্ক টাইমসের এক বিশ্লেষণে দাবি করা হয়েছে যে ইরান, ইসরাইল ও যুক্তরাষ্ট্র তিন পক্ষই এমন একটি অবস্থানে রয়েছে, যেখানে প্রত্যেকে নিজস্ব জনসাধারণ ও বিশ্ববাসীর সামনে বিজয়ের আখ্যান তুলে ধরতে পারছে।
বিশ্লেষণে বলা হয়েছে, ইরানের প্রতিক্রিয়ায় কোনও আমেরিকান নিহত না হওয়ায় এখন যুদ্ধবিরতির সম্ভাবনা উজ্জ্বল হয়েছে। যুদ্ধ পরিকল্পনার সঙ্গে যুক্ত চারজন ইরানি কর্মকর্তার বরাত দিয়ে নিউ ইয়র্ক টাইমসের জাতিসংঘ বিষয়ক সাংবাদিক ফারনাজ ফাসিহি জানান, সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি প্রতিশোধমূলক হামলার নির্দেশ দিলেও সেই হামলা যেন পূর্ণাঙ্গ যুদ্ধে রূপ না নেয়, তা নিশ্চিত করতে চেয়েছিলেন।
ফাসিহির তথ্য মতে, আল-উদেইদ বিমানঘাঁটি লক্ষ্যবস্তু হিসেবে নির্বাচিত হয়েছিল মূলত দুটি কারণে: প্রথমত, ইরান বিশ্বাস করে ঘাঁটিটি পারমাণবিক স্থাপনাগুলিতে মার্কিন বি-২ বোমারু হামলায় জড়িত ছিল; দ্বিতীয়ত, কাতারে এই ঘাঁটি অবস্থিত হওয়ায় ইরান মনে করেছিল সেখানে হামলা করলেও ক্ষতি সীমিত থাকবে, যেহেতু কাতার তাদের ঘনিষ্ঠ মিত্র।
বিশ্লেষণ অনুযায়ী, ইরান হামলার পূর্বে যুক্তরাষ্ট্রকে পরোক্ষ বার্তা পাঠিয়েছিল যাতে প্রাণহানি না ঘটে। ট্রাম্প একে আগাম সতর্কতা হিসেবে উল্লেখ করে ইরানকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন এবং পরে যুদ্ধবিরতির ইঙ্গিত দিয়েছেন।
অন্যদিকে, আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন এই পরিস্থিতিতে তিনটি পক্ষই নিজেদের বিজয় দাবি করতে পারছে—
যুক্তরাষ্ট্র বলতে পারছে তারা ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচিকে আঘাত করেছে,
ইসরাইল দাবি করতে পারে তারা ইরানকে সামরিকভাবে চাপে রেখেছে,
আর ইরান বলছে তারা শক্তিশালী প্রতিপক্ষদের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েছে এবং সফলভাবে প্রতিরোধ গড়ে তুলেছে।
তেহরানের রাজনৈতিক নেতা সাদেঘ নরোউজির মতে, ইরান বর্তমানে কোনও বৃহত্তর ও অনির্দেশ্য যুদ্ধ চায় না।
এই পারস্পরিকভাবে ‘বিজয়ের আখ্যান’ রক্ষা করার সুযোগ, বিশ্লেষকদের মতে, অঞ্চলজুড়ে আরও বড় সংঘাত এড়ানোর জন্য একটি কৌশলগত বিরতি সৃষ্টি করতে পারে।
সূত্র: দ্য নিউ ইয়র্ক টাইমস/আল জাজিরা