ইরান শুক্রবার (১৩ জুন) সন্ধ্যায় ইসরাইলে বড় ধরনের হামলা শুরু করে। এর আগে তেহরানসহ ইরানের কিছু শহরে বিমান হামলা চালিয়েছিল ইসরাইল। এতে ইরানের শীর্ষ সামরিক কমান্ডার ও পারমাণবিক বিশেষজ্ঞসহ অনেকেই নিহত হন।
ইরানি সংবাদ সংস্থা জানায়, ইরান শত শত ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছে। এটিকে তারা ‘ইরানের বিধ্বংসী প্রতিক্রিয়া’ হিসেবে বর্ণনা করে। তেল আবিব, জেরুজালেমসহ আরো কয়েকটি শহরে সাইরেন বেজে ওঠে। ইসরাইলি সরকার নাগরিকদের নিরাপদ কক্ষে চলে যেতে বলে।
ইসরাইলের অ্যাম্বুলেন্স সার্ভিস জানায়, হামলায় তিনজন নিহত হয়। আহত হয় ১৭২ জন। এসব হামলা হয় মধ্য ও উত্তর ইসরাইলে।
ইসরাইলের চ্যানেল ১৩ জানায়, তেল আবিব অঞ্চলে ব্যাপক ধ্বংস হয়েছে। তারা এটিকে ‘অভূতপূর্ব ধ্বংসযজ্ঞ’ হিসেবে বর্ণনা করে।
অনেকেই ইরানের ওপর ইসরাইলের হামলা নিয়ে বিশ্লেষণ করেছেন। তবে প্রশ্ন রয়ে গেছে, ইরান কিভাবে এত শক্তিশালী প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা পেরিয়ে ইসরাইলের ভেতরে ঢুকে এমন হামলা চালাতে পারল?
ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র : আক্রমণাত্মক বাহিনী
এই প্রশ্নের উত্তর পেতে হলে আগে ইরানের ব্যবহৃত অস্ত্রগুলো বোঝা দরকার। ইরান ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রের উপর নির্ভর করেছিল।
ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র বাঁকা পথে চলে। এটি উৎক্ষেপণের পর আকাশে উঠে যায়। পরে বায়ুমণ্ডলের বাইরে ঘুরে আবার নিচে নামে এবং লক্ষ্যবস্তুকে আঘাত করে। এই ক্ষেপণাস্ত্রগুলো খুব দ্রুত চলে। এগুলো আকস্মিক হামলার জন্য উপযুক্ত। এগুলোর পরিসরও বিভিন্ন রকম হয়। কিছু ক্ষেপণাস্ত্র ১,০০০ কিলোমিটারেরও কম দূরত্বে যেতে পারে। আবার কিছু ১১,০০০ বা ১২,০০০ কিলোমিটার পর্যন্ত পৌঁছাতে পারে।
ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র প্রকল্প সম্পর্কে সুনির্দিষ্ট তথ্য নেই। তবে ইরান এ খাতে অনেক বিনিয়োগ করেছে। তাদের ক্ষেপণাস্ত্রগুলোর নির্ভুলতা অনেক উন্নত হয়েছে।
ফাতেহ-৩১৩ ও কিয়াম-১ ক্ষেপণাস্ত্র অনেক নিখুঁত। ফাতেহ-৩১৩ একটি স্বল্প-পাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র। এটি প্রায় ৫০০ কিমি দূরত্বে আঘাত করতে পারে। এতে ইনর্শিয়াল নেভিগেশন ও সম্ভবত স্যাটেলাইট গাইডেন্স থাকে।
কিয়াম-১ ক্ষেপণাস্ত্র ইনর্শিয়াল নেভিগেশন ও টার্মিনাল গাইডেন্স ব্যবহার করে। এতে নির্ভুলভাবে লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত করার ক্ষমতা থাকে।
ইরান কঠিন জ্বালানি ক্ষেপণাস্ত্র তৈরিতে জোর দিয়েছে। এগুলো তরল জ্বালানির চেয়ে দ্রুত ছোড়া যায়। তাই হঠাৎ প্রতিক্রিয়ার ক্ষেত্রে এগুলো বেশি কার্যকর।
কঠিন জ্বালানি স্থিতিশীল। সহজে সংরক্ষণ ও পরিবহনযোগ্য। দূরপাল্লার ও আন্তঃমহাদেশীয় ক্ষেপণাস্ত্রের জন্য এটি উপযুক্ত।
অভিভূত করার নীতি
শুধু নির্ভুল ও শক্তিশালী ক্ষেপণাস্ত্র থাকলেই প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ফাঁকি দেয়া যায় না। ইসরাইল বহুস্তরীয় প্রতিরক্ষা ব্যবহার করে। যুক্তরাষ্ট্র তাদের থাড সিস্টেম দিয়েও সাহায্য করেছে। তাই ইরান একাধিক কৌশল ব্যবহার করেছে। এসব কৌশলের একটি হলো প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে চাপে ফেলা।
যেকোনো প্রতিরক্ষা ‘ট্রু প্রমিজ ২’ অভিযানে আমরা দেখেছি, ইরান একসাথে অনেক ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়েছে। তারা একটিমাত্র ক্ষেপণাস্ত্র নয়, গুচ্ছ আকারে নিক্ষেপ করে। এভাবে প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে আচ্ছন্ন করা সম্ভব হয়। ফিলিস্তিনিরাও একই কৌশল ব্যবহার করে থাকে।
প্রতিটি আয়রন ডোম ব্যাটারিতে প্রায় ৬০টি ইন্টারসেপ্টর থাকে। ইসরাইলের কাছে ১০টির বেশি ব্যাটারি আছে। এই সংখ্যা সীমিত। তাই খুব অল্প সময়ে শত শত ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়া হলে আয়রন ডোম সেগুলো ঠেকাতে পারে না। ফলে অনেক ক্ষেপণাস্ত্র লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত করতে সক্ষম হয়।
ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র একসাথে নিক্ষেপ করলে এই চাপ আরো বাড়ে। এতে প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা দুর্বল হয়। ফলে আঘাত আরো কার্যকর হয়।
একইভাবে, অনেক মাঝারি-পাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র একসাথে ছোড়া হলে ডেভিডস স্লিং সিস্টেমে চাপ পড়ে। দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়া হলে অ্যারো ২, অ্যারো ৩ ও থ্যাড-এর ওপরও চাপ সৃষ্টি হয়।
এইভাবে ইরান একাধিক কৌশল ও প্রযুক্তি ব্যবহার করে ইসরাইলের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে ব্যর্থ করতে পেরেছে। ফলে তারা গভীরভাবে ইসরাইলে আঘাত হানতে সক্ষম হয়।
প্রকৃতপক্ষে, এটি ইসরাইলি কর্মকর্তাদের জন্য অপ্রত্যাশিত ছিল না। ইসরাইলি সামরিক কর্মকর্তারা আগে থেকেই উদ্বেগ প্রকাশ করেছিলেন। তারা বলেছিলেন, একসাথে অনেক রকেট ছোড়া হলে প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা চাপা পড়ে যাবে। তাদের মতে, শত্রুরা প্রতিদিন প্রায় ৩,০০০ রকেট ও ক্ষেপণাস্ত্র ছুঁড়তে পারে। এই সংখ্যা ইসরাইলের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার সক্ষমতার বাইরে।
এই আশঙ্কা সত্ত্বেও আমরা এখনো ইসরাইলের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার প্রযুক্তিগত সমস্যাগুলো নিয়ে আলোচনা করিনি। যদিও এই ব্যবস্থা শক্তিশালী, তবুও কিছু দুর্বলতা রয়েছে। উদাহরণস্বরূপ, এমআইটি-র থিওডোর পোস্টল অনুমান করেছেন, গাজা থেকে ছোড়া রকেট ঠেকানোর ক্ষেত্রে আয়রন ডোমের সফলতা ১০ শতাংশেরও কম। কারণ, ইন্টারসেপ্টর ক্ষেপণাস্ত্র অনেক সময় লক্ষ্যবস্তুতে সরাসরি আঘাত না করে পাশেই বিস্ফোরিত হয়। ফলে রকেটটির ওয়ারহেড ধ্বংস না হয়ে তা মাটিতে পড়ে বিস্ফোরিত হয়। তা সত্ত্বেও এটিকে ‘সফল বাধাদান’ হিসেবে গণ্য করা হয়।
এই বিশ্লেষণ রেথিয়নের সাবেক অস্ত্র বিশেষজ্ঞ রিচার্ড লয়েডের মতামতের সাথে মিলে যায়। একইভাবে, ইসরাইলি সেনাবাহিনীর বিমান বাহিনীর সাবেক সদস্য রুভেন পেদাতজুর এবং ইসরাইল প্রতিরক্ষা পুরস্কারপ্রাপ্ত মোর্দেচাই শেফারও বলেন, আয়রন ডোমের প্রকৃত সফলতা ৫ থেকে ৪০ শতাংশের মধ্যে সীমাবদ্ধ।
ইরানের পক্ষ থেকে যে তিনমুখী হামলার কৌশল গৃহীত হয়েছে, তা এই দুর্বলতাগুলোর সুযোগ নিতে পারে। ইরানের ক্ষেপণাস্ত্রগুলো ইসরাইলে বড় ধরনের ক্ষতি করতে সক্ষম, যদি রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। আমরা সম্প্রতি বাস্তবে তার প্রমাণও পেয়েছি। যদিও ইসরাইলের হাতে উন্নত প্রযুক্তি এবং পশ্চিমা বিশ্বের ব্যাপক সহায়তা রয়েছে। তবুও ইরান কার্যকর প্রতিরোধ গড়ে তুলতে পেরেছে।
এই বাস্তবতা ১৯৯৪ সালে পারমাণবিক পদার্থবিদ পিটার জিমারম্যানের বিশ্লেষণের সাথে সঙ্গতিপূর্ণ। তিনি বলেন, যুদ্ধে জেতার জন্য সব সময় ‘স্বর্ণপদক’ মানের প্রযুক্তি দরকার হয় না। বরং ‘ব্রোঞ্জ পদক’ প্রযুক্তিও যথেষ্ট হতে পারে, যদি সেটি সঠিকভাবে ব্যবহার করা হয়। অল্প নির্ভুল অস্ত্রকেও কার্যকর বানানো সম্ভব।
ইরান কেবল ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রের উপর নির্ভর করছে না। তারা এখন তিন ধরণের আকাশভিত্তিক অস্ত্রের ওপর জোর দিচ্ছে ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র, ড্রোন এবং স্থল-আক্রমণকারী ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র। ড্রোন উৎপাদনে ইরান অনেক অগ্রগতি করেছে। শাহেদ ১৩৬ আত্মঘাতী ড্রোন এর বড় উদাহরণ। ২০২৩ সালে ইউক্রেন যুদ্ধে রাশিয়া এটি ব্যাপকভাবে ব্যবহার করে এবং তার কার্যকারিতা প্রমাণিত হয়।
ইরান বিভিন্ন ধরনের ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্রও তৈরি করেছে, যা নিচু দিয়ে উড়ে রাডার এড়াতে পারে। এগুলো বিমানের মতো কৌশল অবলম্বন করে, ফলে এগুলোকে শনাক্ত করা এবং থামানো কঠিন হয়ে পড়ে। এর মধ্যে রয়েছে সৌমার (৭০০–৩,০০০ কিমি) ও হোভেইজেহ (১,৩৫০ কিমি) নামের ক্ষেপণাস্ত্র।
এই অস্ত্রভাণ্ডার ইরানকে সম্মিলিত অস্ত্র যুদ্ধ চালাতে সক্ষম করে তুলেছে। এই যুদ্ধ পদ্ধতিতে একসাথে বিভিন্ন ধরনের অস্ত্র ব্যবহার করা হয়। যেমন, হামলার শুরুতে ড্রোন দিয়ে রাডার টার্গেট করা হয়। তখন প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ড্রোন ঠেকাতে ব্যস্ত হয়ে পড়ে। ফলে ব্যালিস্টিক ও ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র সহজে আঘাত হানতে পারে। কারণ, প্রতিটি অস্ত্রের কৌশল ও গতিপথ আলাদা হওয়ায় প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা সবকিছু একসঙ্গে ঠেকাতে পারে না।
ড্রোনগুলো সাধারণত দলবদ্ধভাবে হামলা চালায়। কিছু সরাসরি আঘাত হানে, আর কিছু শত্রুর দুর্বলতা শনাক্ত হওয়ার জন্য অপেক্ষা করে। এতে হামলার জটিলতা ও কার্যকারিতা অনেক বেড়ে যায়।
এছাড়া, ইরান হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র তৈরিতেও মনোযোগ দিচ্ছে। এই প্রযুক্তির মাধ্যমে ইসরাইলের বহু-স্তরীয় প্রতিরক্ষা ভেদ করা সম্ভব। ২০২২ সালে ইরান তাদের প্রথম হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র তৈরি করার ঘোষণা দেয়। তখন কেবল যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া ও চীনের মতো দেশগুলোর কাছে এ প্রযুক্তি ছিল।
২০২৩ সালের জুনে ইরান আনুষ্ঠানিকভাবে ‘ফাতেহ’ নামের হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র উন্মোচন করে, যার রেঞ্জ ১,৪০০ কিলোমিটার। এটি ইসরাইলের যেকোনো স্থানে পৌঁছাতে সক্ষম। হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র শব্দের চেয়ে পাঁচগুণ গতিতে চলে। এগুলো গতিপথ পরিবর্তন করতে পারে এবং ভূমির কাছাকাছি দিয়ে যায়, ফলে রাডার দ্বারা আগাম সতর্কতা দেয়া কঠিন হয়।
এমনকি আগাম সতর্কতা এলেও ক্ষেপণাস্ত্রের গতি এত বেশি যে প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা কিছু করার আগেই আঘাত ঘটে যায়। হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র সাধারণত দুই ধরণের হয় উইংড ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র ও গ্লাইড যান। ফাতেহ হলো একটি গ্লাইড যান, যা ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রের মাধ্যমে মহাকাশে ওঠে, তারপর সেখান থেকে গ্লাইড করে নিচু গতিপথে গিয়ে লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানে।
ফাতাহ ক্ষেপণাস্ত্র সম্পর্কে আমাদের কাছে এখনো বিস্তারিত তথ্য নেই। বিশেষ করে এর নির্ভুলতা ও কার্যকারিতার বিষয়ে যথেষ্ট গবেষণা হয়নি। তবে সাধারণভাবে বলা যায়, এই ধরনের হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র ইসরাইলের বহু-স্তরযুক্ত বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার জন্য একটি বড় হুমকি। কারণ, এটি কেবল দ্রুতগতিসম্পন্ন নয়, বরং এমনভাবে ডিজাইন করা হয়েছে যাতে এটি রাডার এড়িয়ে চলতে পারে এবং প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার প্রতিক্রিয়ার আগেই আঘাত হানতে পারে।
এই হুমকি আরো মারাত্মক হয়ে ওঠে যখন এই ধরনের ক্ষেপণাস্ত্র ড্রোন ও অন্যান্য অস্ত্রের সঙ্গে সমন্বিতভাবে ব্যবহার করা হয়। একযোগে বিভিন্ন দিক থেকে হামলা হলে ইসরাইলের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা সহজেই বিভ্রান্ত হয়ে পড়ে এবং প্রতিটি হামলা ঠেকানো সম্ভব হয় না। ফাতাহের মতো হাইপারসনিক অস্ত্র সেই দুর্বলতাগুলো আরো প্রকট করে তোলে।
সবশেষে ইরান ও ইসরাইলের মধ্যে সাম্প্রতিক সরাসরি সংঘর্ষ একটি নতুন অধ্যায়ের সূচনা করেছে। ইসরাইল দীর্ঘদিন ধরে মূলত উপ-রাষ্ট্রীয় গোষ্ঠী যেমন হামাস বা হিজবুল্লাহর মতো শক্তির সাথে লড়াই করেছে। কিন্তু এখন এটি একটি সংগঠিত রাষ্ট্রীয় বাহিনীর মুখোমুখি, যার রয়েছে বিপুল অস্ত্রভাণ্ডার, উন্নত প্রযুক্তি এবং বহুস্তরীয় যুদ্ধ কৌশল।
এই নতুন বাস্তবতা ইসরাইলের জন্য একধরনের বড় চ্যালেঞ্জ। কারণ, এটি এখন এমন এক প্রতিপক্ষের মুখোমুখি, যাকে মোকাবিলা করার অভিজ্ঞতা তাদের নেই। এর ফলে ইসরাইলের গোটা সামরিক ও কৌশলগত ব্যবস্থাকে কঠিন এক পরীক্ষার মুখোমুখি হতে হবে, যেখানে প্রতিটি ভুলের দাম হতে পারে বিপর্যয়কর।
সূত্র : আল জাজিরা নেট