টুডেনিউজ বিডি ডটনেট
সম্প্রতি ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ‘ডিপ স্টেস্ট’ শব্দটি তার বক্তৃতায় ঘন ঘন ব্যবহার করছেন। যুক্তরাষ্ট্র সফর থেকে ফেরার পর তিনি এ বিষয়ে বারবার কথা বলছেন, যা দেশটির বিচার বিভাগ, গোয়েন্দা সংস্থা ও প্রশাসনিক কাঠামোর বিরুদ্ধে এক যুদ্ধ ঘোষণা করার ইঙ্গিত দিচ্ছে।
মন্ত্রিসভার এক বৈঠকে নেতানিয়াহু বিচার বিভাগকে আক্রমণ করে বলেন, এটি ‘একটি বিশেষ শ্রেণি’। এরপর তিনি তাদের বিরুদ্ধে কঠোর বক্তব্য দেন। বিচার বিভাগের সমালোচনার মূল কারণ হচ্ছে অ্যাটর্নি জেনারেল গালি বাহারাভ-মিয়ারার দেয়া আইনি মতামত, যেখানে তিনি বেন-গভিরের জাতীয় নিরাপত্তামন্ত্রী হওয়ার বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন। এরপর নেতানিয়াহুর অনুগত মন্ত্রীরা বেন-গভিরকে পুনর্বহাল করেন এবং শিন বেত গোয়েন্দা সংস্থার প্রধান রোনেন বারকে বরখাস্তের সিদ্ধান্ত নেন।
ইসরাইলের জনগণ বর্তমানে যুদ্ধ, অর্থনৈতিক সঙ্কট এবং রাজনৈতিক অস্থিরতার মুখোমুখি। সেনা রিজার্ভ সদস্যদের দীর্ঘ যুদ্ধে আটকে থাকায় তাদের পরিবার দারিদ্র্যের সম্মুখীন হচ্ছে। একই সময়ে তেলআবিব ও জেরুজালেমে গণতন্ত্র রক্ষার দাবিতে প্রতিবাদ হচ্ছে।
নেতানিয়াহুর দৃষ্টিতে তার বিরুদ্ধে চলমান কাতারগেট তদন্ত একটি বড় হুমকি। শিন বেতের তদন্ত তাকে শঙ্কিত করে তুলেছে। কারণ এতে তার সরকারের দুর্নীতির বিষয় সামনে আসছে। নেতানিয়াহুর দীর্ঘদিনের উপদেষ্টা ইয়োনাতান উরিখ এই কেলেঙ্কারির কেন্দ্রীয় চরিত্র।
নেতানিয়াহুর সরকার সুপ্রিম কোর্টসহ বিচার ব্যবস্থাকে আক্রমণ করছে। এমনকি সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি নোম সোলবার্গকে ৭ অক্টোবর হামলার তদন্ত কমিশনে অন্তর্ভুক্ত করতেও অস্বীকৃতি জানানো হয়েছে। এটি ইসরাইলের গণতান্ত্রিক কাঠামোর বিরুদ্ধে বড় হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে।
প্রেসিডেন্ট আইজ্যাক হার্জগ স্বাধীন বিচার বিভাগের প্রশংসা করেছেন। তবে নেতানিয়াহুর একনায়কতান্ত্রিক প্রবণতা ঠেকানোর জন্য তার ভূমিকা কতটা কার্যকর হবে, তা নিয়ে প্রশ্ন থেকে যাচ্ছে।
নেতানিয়াহুর ‘ডিপ স্টেস্টের বিরুদ্ধে যুদ্ধ’ ইসরাইলকে এক গভীর রাজনৈতিক সঙ্কটের দিকে ঠেলে দিচ্ছে। তার বিচার এড়ানোর মরিয়া প্রচেষ্টা ও ক্ষমতা টিকিয়ে রাখার কৌশল দেশটির গণতন্ত্রের জন্য একটি বড় হুমকি হয়ে উঠেছে।
সূত্র : হারেৎজ