হামাস গাজায় ইসরাইল-সমর্থিত একটি সশস্ত্র গ্যাংয়ের নেতাকে আত্মসমর্পণের জন্য ১০ দিনের সময়সীমা দিয়েছে। তার বিরুদ্ধে মানবিক সহায়তা লুটপাটে জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে।
বিপ্লবী আদালতের আওতাধীন সামরিক বিচার বিভাগ জানিয়েছে, পপুলার ফোর্সেসের ৩৫ বছর বয়সী নেতা ইয়াসির আবু শাবাবের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহ, শত্রুপক্ষের সাথে সহযোগিতা, সশস্ত্র গ্যাং গঠন এবং সশস্ত্র বিদ্রোহের অভিযোগ আনা হয়েছে।
ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু স্বীকার করেছেন, হামাসের বিরুদ্ধে মোকাবেলা করার জন্য ইসরাইল পপুলার ফোর্সেসকে অস্ত্র দিয়েছে। এই গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে মানবিক সহায়তা চুরির অভিযোগ এনেছে বিভিন্ন সাহায্যকারী সংগঠন।
এক ফেসবুক বিবৃতিতে পপুলার ফোর্সেস আদালতের আদেশকে ‘একটি হাস্যকর নাটক’ হিসেবে উল্লেখ করে জানিয়েছে, ‘এটি আমাদের ভয় দেখাতে পারবে না, এমনকি কোনো স্বাধীন মানুষকেও নয়, যারা নিজের মাতৃভূমি ও তার সম্মানকে ভালোবাসে।’
মাদক পাচারের অভিযোগে গ্রেফতার আবু শাবাব ২০২৩ সালের অক্টোবরে গাজায় ইসরাইলি আগ্রাসন শুরুর সময় কারাগার থেকে পালিয়ে যেতে সক্ষম হন।
পালানোর পর তিনি কয়েক শ’ লোককে একত্র করে গাজা, ইসরাইল এবং মিসরের সংযোগস্থল কারেম আবু সালেম (কেরেম শালোম) ক্রসিংয়ের কাছে একটি এলাকা দখলে নেন।
ইসরাইলি সংবাদমাধ্যমগুলোর প্রতিবেদন অনুযায়ী, আবু শাবাবকে রক্ষা করতে গিয়ে হামাস যোদ্ধাদের সাথে মিলিশিয়াদের সংঘর্ষ হলে সেখানে ইসরাইলি সৈন্যরা হস্তক্ষেপ করে।
জাতিসঙ্ঘের একটি ফাঁস হওয়া স্মারকে তাদের ঘাঁটিকে ‘সীমাবদ্ধ, নিয়ন্ত্রিত এবং টহল দেয়া এলাকা’র মধ্যে অবস্থিত ‘সামরিক-সদৃশ একটি কম্পাউন্ড’ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।
মে মাসের মাঝামাঝি, খাদ্য নিরাপত্তা ও পুষ্টি বিশ্লেষণ সংক্রান্ত বৈশ্বিক উদ্যোগ ‘ইন্টিগ্রেটেড ফুড সিকিউরিটি ফেজ ক্লাসিফিকেশন’ (আইপিসি) জানায়, আগামী ছয় মাসে গাজা এমন এক পরিস্থিতির মুখোমুখি হবে যা ‘সঙ্কট অথবা আরো গুরুতর খাদ্য নিরাপত্তাহীনতা’ হিসেবে চিহ্নিত।
সম্প্রতি পরিচালিত মার্কিন-ইসরাইলি সহায়তা উদ্যোগ, যা সাহায্য বিতরণে সামরিকীকরণ কৌশল অনুসরণ করছে, সেটি গাজায় খাদ্য ঘাটতি আরো বাড়িয়ে তুলেছে এবং বর্তমানে তা তদন্তের মুখে রয়েছে।
মঙ্গলবার এক যৌথ বিবৃতিতে, ১৩০টিরও বেশি এনজিও অবিলম্বে এই ‘মারাত্মক’ মার্কিন ও ইসরাইল-সমর্থিত গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশন (জিএইচএফ) সহায়তা প্রকল্প বন্ধ করার আহ্বান জানায় এবং জাতিসঙ্ঘের নেতৃত্বাধীন সহায়তা সমন্বয় ব্যবস্থায় ফিরে যাওয়ার দাবি জানায়।
ইসরাইলি বাহিনী কর্তৃক গাজায় তিন মাসব্যাপী অবরোধের পর মে মাসের শেষদিকে জিএইচএফ কার্যক্রম শুরু হয়। এরপর থেকে খাদ্য ও সাহায্য সংগ্রহ করতে গিয়ে ইসরাইলি সৈন্যদের হাতে ৫০০-র বেশি ফিলিস্তিনি নিহত এবং প্রায় ৪ হাজার আহত হয়েছে।
সূত্র : মিডল ইস্ট আই