ইসলামি দলগুলোর ঐক্যের মাধ্যমে বিকল্প রাজনৈতিক শক্তি চান মুফতি ফয়জুল করিম
চরমোনাইয়ের পীর মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করিম বলেছেন, দেশের জনগণ আওয়ামী লীগ ও বিএনপির বাইরে একটি বিকল্প রাজনৈতিক শক্তি চায় এবং ইসলামি দলগুলোর ঐক্যের মাধ্যমেই সেই শক্তি তৈরি হতে পারে।
তিনি জানান, ইসলাম, মানবতা ও দেশের কল্যাণ—এই তিনটি মূলনীতি মেনে ইসলামী দলগুলোর মধ্যে ঐক্যের আলোচনা চলছে এবং শিগগিরই ইতিবাচক খবর আসবে।
তার মতে, অতীতে বিএনপির জনসমর্থন থাকলেও বর্তমানে তা নেই, আর আওয়ামী লীগ ও বিএনপির শাসনের মধ্যে সাধারণ মানুষ কোনো পার্থক্য খুঁজে পাচ্ছে না। দুই দলের শাসনেই ফ্যাসিবাদ, দুর্নীতি, লুটপাট, নির্যাতন, গুম ও অবিচার দেখা গেছে। তাই জনগণ এখন তৃতীয় কোনো শক্তিকে ক্ষমতায় দেখতে চায়, যারা দুর্নীতিমুক্ত, ন্যায়ভিত্তিক ও মানবিক শাসন প্রতিষ্ঠা করবে।
ফয়জুল করিম বলেন, জামায়াতে ইসলামীসহ সকল ইসলামি দলের সঙ্গে ঐক্যের পথ উন্মুক্ত, যদি তারা ইসলাম, মানবতা ও দেশের স্বার্থে একমত হয়। এমনকি বিএনপির সঙ্গেও ঐক্য সম্ভব যদি তারা ইসলাম ও শরিয়াবিরোধী কোনো আইন পাস না করার এবং বিদ্যমান শরিয়াবিরোধী আইন বাতিলের অঙ্গীকার করে।
তিনি উল্লেখ করেন, অতীতের সব সরকারই জনগণকে হতাশ করেছে এবং তাই জনগণ নতুন বিকল্প শক্তি খুঁজছে।
তিনি সংখ্যানুপাতিক নির্বাচন ব্যবস্থার পক্ষে জোরালো মত দেন, যাতে আসনভিত্তিক নির্বাচনের বৈষম্য দূর হয় এবং সকল রাজনৈতিক দল ভোটের অনুপাতে প্রতিনিধিত্বের সুযোগ পায়। যদি সংখ্যানুপাতিক ব্যবস্থা বাস্তবায়িত না হয় বা ঐক্য না হয়, তাহলে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ তিনশ আসনে প্রার্থী দিয়ে নির্বাচন করবে বলে জানান।
আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, তিনি কোনো রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধের পক্ষপাতী নন; তবে যারা গণহত্যা, গুম ও ফ্যাসিবাদে লিপ্ত হয়, তাদের রাজনীতি করার অধিকার থাকা উচিত নয়।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের ১০০ দিনের কর্মপরিকল্পনা নিয়ে তিনি বলেন, সরকার কিছু ভালো উদ্যোগ নিয়েছে, যা তারা সমর্থন করেন। তবে এখনো ফ্যাসিস্ট মানসিকতার লোকজনের উপস্থিতিতে শঙ্কা রয়ে গেছে।
তিনি মনে করেন, দ্রুত নির্বাচন করে ক্ষমতা দখলের চেষ্টা না করে প্রয়োজনীয় সংস্কার সম্পন্ন করে ধাপে ধাপে এগোনো উচিত।
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ দেশের ইসলাম, উন্নয়ন, সমৃদ্ধি ও মানবাধিকার রক্ষায় অগ্রণী ভূমিকা রাখতে প্রস্তুত বলে তিনি মন্তব্য করেন।
যুগান্তরকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি এসব কথা বলেন।
চীনা কমিউনিস্ট পার্টির প্রতিনিধিদলের সঙ্গে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের বৈঠক