ইউনিভার্সিটি টিচার্স কনসোর্টিয়াম (ইউটিসি) এক বিবৃতিতে নারী বিষয়ক সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদনকে পক্ষপাতদুষ্ট, ভিত্তিহীন এবং বিভ্রান্তিকর আখ্যা দিয়ে তা প্রত্যাখ্যান করেছে। সেখানে তারা কমিশনের বিলুপ্তি এবং সুপারিশসমূহ বাতিলের জোর দাবি জানিয়েছে।
ইউটিসি বলেছে, প্রতিবেদনটিতে কোনো গ্রহণযোগ্য গবেষণা পদ্ধতি অনুসরণ করা হয়নি এবং প্রমাণ-যুক্তির অভাব রয়েছে। প্রতিবেদনে ধর্মীয় বিশ্বাস, পারিবারিক কাঠামো ও সামাজিক শৃঙ্খলার ওপর আদর্শিক আক্রমণ করা হয়েছে। কমিশনের প্রধান একজন সাক্ষাৎকারে বলেছেন যে, নারীর বিষয়ে ধর্মের কোনো বক্তব্য নেই—এমন মন্তব্য ধর্মপ্রাণ নারীদের উন্নয়নের পরিবর্তে ধর্মবিরোধী অ্যাজেন্ডা বাস্তবায়নের ঝুঁকি তৈরি করে।
ইউটিসি আরও জানায়, এই প্রতিবেদন কেবল নারীর অধিকার নয়, বরং রাষ্ট্রধর্ম, সংবাদপত্রের স্বাধীনতা, পার্বত্য চট্টগ্রাম, তত্ত্বাবধায়ক সরকার, মৃত্যু দণ্ড, ৭০ অনুচ্ছেদ, রাষ্ট্রভাষা ইত্যাদি সংবিধানিক বিষয়ে মত দিয়েছে, যা একটি নারী কমিশনের সীমা ছাড়িয়ে গেছে। রিপোর্টটি ইসলামি শরিয়াহ ও পারিবারিক মূল্যবোধের ওপর সরাসরি আক্রমণ করেছে এবং দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলিম নারীদের বিশ্বাসের সঙ্গে সাংঘর্ষিক। ইউটিসির দাবি, এই কমিশনের সদস্যরা দেশের ধর্মীয় নারীদের প্রতিনিধিত্ব করেন না, বরং পশ্চিমা এনজিওদের অ্যাজেন্ডা বাস্তবায়নে তৎপর।
তারা আরও বলেছে, নারী-পুরুষের সমতা নামে এমন একটি তত্ত্ব চাপানো হয়েছে, যা জৈবিক ও সামাজিক বাস্তবতার সঙ্গে সাংঘর্ষিক। এতে নারী ও পুরুষের মর্যাদাপূর্ণ পার্থক্য অস্বীকার করে কৃত্রিম প্রতিযোগিতা তৈরি করা হয়েছে। যৌনকর্মীদের উপস্থাপনাও হয়েছে অসম্মানজনকভাবে, যা মানবিক মর্যাদার পরিপন্থি। ইউটিসি দেশে যৌনপল্লীগুলো বন্ধ করে সেখানকার নারীদের সম্মানজনক জীবিকা নিশ্চিত করার আহ্বান জানিয়েছে।
সবশেষে তারা জানায়, প্রতিবেদনটি গবেষণা ও যুক্তি থেকে বিচ্ছিন্ন, ইসলামি মূল্যবোধবিরোধী, নারীর মর্যাদা ও পারিবারিক কাঠামোর বিরুদ্ধে, এবং বাংলাদেশের বাস্তবতার সঙ্গে সাংঘর্ষিক। ভবিষ্যতে এমন কমিশন গঠনে ধর্মীয় চিন্তাবিদ ও বিভিন্ন শ্রেণির নারীদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করার আহ্বান জানানো হয়েছে।
উল্লেখ্য, এর আগে সোহরাওয়ার্দি উদ্যানে অনুষ্ঠিত হেফাজতের সমাবেশ থেকে ওই কমিশনটি বাতিল করার দাবি জানানো হয়।