কোরবানি

‘কোরবানিতে মনের পশু ও বনের পশুর আলাপ অসার-অযৌক্তিক’

শুনতে খুব ‘আদর্শ’ মনে হলেও বস্তুতপক্ষে ‘মনের পশু’র সঙ্গে কোরবানির কোনো সম্পর্ক নেই। সেই সুযোগও নেই। ইসলামে ঈদুল আযহার ইতিহাস ও বয়ানের মধ্যে এমন কিছু নেই।

মনের পশুত্ব মানে নফস বা খারাবি বা রিপুবিশেষ; প্রতীকী অর্থে আমরা ‘মনের পশু’ বলি। রিপুর তাড়না বা মনের পশুত্বকে নিয়ন্ত্রণ ও দমন করতে হয় নিজেকে পরিশুদ্ধ করার জন্য। রমজান মাস সেটার ট্রেনিং ও লার্নিং নিয়ে আসে।

অন্য দিকে, কোরবানির পশু পবিত্র, যা আল্লাহর প্রতি উৎসর্গের জন্য নির্ধারিত। এটি গৃহপালিত ও নিরীহ পশু হতে হয়। এমনকি বনের পশুর সঙ্গেও এর কোনো সম্পর্ক নেই।

বনের পশু যেমন, হিংস্র বন্য গরু, বাঘ, শিয়াল, সিংহ ধরে এনে কোরবানি দিলে হবে না। আমরা সেটা করিও না।
ফলে কোরবানিতে বনের পশু ও মনের পশুর আলাপ নিছক অজ্ঞতা ও সেকুলার সুড়সুড়ি। ধর্মীয় পার্সস্পেক্টিভ অগ্রাহ্য করা সেকুলারদের জন্য এটা মুখরোচক। এত বড় একটা ধর্মীয় উৎসবকে সামাজিকভাবে এড়াতে পারে না বলেই তারা ধর্মীয় পার্সস্পেক্টিভের বাইরে একটা নির্ধর্মীয় বয়ান চর্চা করে। অনেকে অজ্ঞতার কারণে সেই বয়ানের ফাঁদে পড়ে যায়। মুসলমানরা কোরবানির আসল তাৎপর্য ভুলে ভিন্ন বিষয়ে দৃষ্টি ফেরাক, এটা উ-গ্র সেকুলাররা চায়।

আল্লাহ তায়ালা আমাদের মুসলিম জাতির পিতা হযরত ইবরাহিম আ.-কে নির্দেশ দিয়েছিলেন তার সবচে প্রিয় বস্তু আল্লাহর জন্য কুরবানি করতে।

আমরা জানি, তিনি তার প্রিয় বস্তুকে কুরবানি দিয়েছিলেন; কিন্তু আল্লাহ তায়ালার অশেষ কুদরতে তার প্রিয় পুত্রের বদলে জান্নাতি দুম্বা কুরবানি হয়ে যায়। তাহলে এখানে কুরবানির ইতিহাসে মনের পশুর প্রসঙ্গ কীভাবে আসতে পারে!?

মনের প্রতীকী পশু তো আপনার আমার প্রিয় বস্তু হতে পারেনা, বরং এটা অপবিত্র ও পরিত্যাজ্য বিষয়। আর কুরবানির পশু হলো অত্যন্ত পবিত্র ও প্রিয় একটি বস্তু, যা আল্লাহকে উৎসর্গ করার জন্য প্রস্তুত করা হয়।

ফলে প্রিয় ও পবিত্র কুরবানির পশুর ওপর নিজের মনের ঘৃণিত পশুত্ব আরোপ করলে তা কুরবানির পশুর পবিত্রতা নষ্ট করে। কারণ, আল্লাহর নিকট কোরবানির পশুর মাংস পৌঁছে না, পৌঁছে আমাদের তাকওয়া ও পবিত্র নিয়ত।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *


Scroll to Top