সাধারণ ও দরকারি আন্দোলনী নাগরিক ইস্যুতে ভারসাম্য বজায় রেখে হুজুরদের অংশগ্রহণ দরকার মনে মন্তব্য করেছেন কওমি বুদ্ধিজীবী ও সময়ের জনপ্রিয় ইসলামী ব্যক্তিত্ব মাওলানা শরীফ মুহাম্মদ।
তিনি বলেন, সাধারণ ও দরকারি আন্দোলনী নাগরিক ইস্যুতে জেনারেল ধারার সংগঠন কিংবা ছাত্র জনতার সাথে ব্যাপক পরিমাণে বেশি সংখ্যক মাদ্রাসা ছাত্র/ইসলামী কমিউনিটির লোকজনের অংশগ্রহণের ব্যাপারগুলোকে সঠিক মনে হয় না। মাদ্রাসা ব্যাকগ্রাউন্ডের লোকজন সর্বোচ্চ সেখানে ৩/১ বা ৪/১ অনুপাতে থাকতে পারে। সংখ্যাটা অর্ধেক হওয়াও ঠিক না। এসব ইস্যুতে বেশি বেশি হুজুর শ্রেণীর উপস্থিতি বর্তমান ও ভবিষ্যতে নানা রকম জটিলতার ক্ষেত্র তৈরি করতে পারে।
বিষয়টির বিশদ ব্যাখ্যা করে মাওলানা শরীফ মুহাম্মদ বলেন, না, কোনো অভিমান, আত্মরক্ষা-কেন্দ্রিক ভীতি কিংবা গয়রাত থেকে উপরের কথাগুলো বলিনি। দেশি-বিদেশি মিডিয়া, কূটনীতির কুটিল শ্রেণী এবং সুযোগ সন্ধানী প্রচারবিদেরা জেনারেল ইস্যুতে হুজুর ব্যাকগ্রাউন্ডের ব্যাপক অংশগ্রহণকে জটিল-ভাবে চিত্রিত করার চেষ্টা করবে। এতে আর যাই হোক মূল ইস্যুর ক্ষতি হবে। বাড়তি ক্ষতি হবে হুজুর শ্রেণীর; আজ কিংবা কাল। আর এতে বিশেষ কোনো ফায়দাও হয় না। আন্দোলনে উপস্থিতি বৈচিত্রের ভারসাম্য নষ্ট হয়। তবে প্রতিনিধিত্বের জন্য মুখচেনা কিছু দ্বীনি মানুষ ও স্বল্প অনুপাতে ছাত্র শিক্ষক হাজিরা দিয়ে যেতে পারে। এর চেয়ে বেশি স্ফীত ও উচ্ছ্বসিত উপস্থিতি দরকার নাই। সামনের দিনগুলোতে এটা খেয়াল রাখলে ভালো।
আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের আন্দোলনে তার শরীক হওয়ার কারণ উল্লেখ করে তিনি বলেন, গত বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে যমুনার সামনে জমায়েত হওয়া প্রতিবাদী জটলায় নিছক সংহতিমূলক উপস্থিতির জন্য কিছু সময় ছিলাম। মনে হয়েছিল, একটি বড় কাজের জন্য কিছু মানুষ কষ্ট করছেন, তাদের অন্তত দেখে আসা দরকার। এরকম হয়তো আরো বিভিন্ন জায়গায় যাওয়া হবে। এসব বিষয়ে উপস্থিতির শরিকানা এতোটুকুই কিংবা এর কাছাকাছিই থাকা উচিত।
তিনি আরো বলেন, কোনো রাগ-বিরাগ থেকে নয়, ফিরে আসার সময় সেদিন এক স্নেহভাজনকে বলেছিলাম, এখানে মাদ্রাসা ব্যাকগ্রাউন্ডের লোকজন আরো কম থাকলে ভালো হতো। এনসিপির একটি অংশের ডাক, ছাত্রজনতার আন্দোলনের স্বাভাবিক চেহারাটা তাদের মতই থাকুক। হুজুররা যে তাদের সঙ্গে আছে, এটা ঠিক রাখার জন্য কিছু লোক যাক-আসুক। অর্ধেক কিংবা তার চেয়ে বেশি হুজুরে সয়লাভ হয়ে যাওয়া সুন্দর না, সংগত না। এতে আন্দোলনের চেহারা ও ইসু, প্রোপাগান্ডা ও ন্যারেটিভ অন্যদিকে চলে যায়।
তিনি সঠিক উপায় নির্দেশ করে বলেন, সবকিছুতেই সবলভাবে স্টেইকহোল্ডার হতে হবে, না হলে মন খারাপ করতে হবে, এটা কেন যেন ঠিক মনে হয় না। লক্ষ্যের দিকে তাকিয়ে পেছনের দিকেও থাকা যায়।