কুমার, ভারতীয় সেনাবাহিনী,

পাকিস্তানের বিরুদ্ধে যুদ্ধে রাজি না হওয়ায় জেনারেল সুচেন্দ্র কুমারকে বরখাস্ত করল মোদি সরকার

পাকিস্তানের বিরুদ্ধে যুদ্ধে রাজি না হওয়ায় কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ নর্দার্ন কমান্ডের প্রধান লেফটেন্যান্ট জেনারেল এমভি সুচেন্দ্র কুমারকে বরখাস্ত করেছে মোদি সরকার। এ ঘটনায় ভারতীয় সেনাবাহিনীর অভ্যন্তরে বেশ অসন্তোষ সৃষ্টি হয়েছে।

সানা নিউজের প্রতিবেদনে বলা হয়, পহেলগাম হামলাকে কেন্দ্র করে ভারতীয় সেনাবাহিনী গভীর অভ্যন্তরীণ সঙ্কটে পড়েছে। অভ্যন্তরীণ সূত্র এই ঘটনাকে ‘সাজানো নাটক’ হিসেবে আখ্যা দিয়েছে। ২২ এপ্রিলের এই হামলায় ২৬ জন নিহত হন। পরে কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ নর্দার্ন কমান্ডের প্রধান লেফটেন্যান্ট জেনারেল এমভি সুচেন্দ্র কুমারকে বরখাস্ত করে সরকার। তার স্থলাভিষিক্ত হিসেবে লেফটেন্যান্ট জেনারেল প্রতীক শর্মা ২৮ এপ্রিল দায়িত্ব গ্রহণ করেন।

সরকারের উচ্চ-পর্যায়ের সূত্র জানিয়েছে, গোয়েন্দা ত্রুটি ও নিরাপত্তা ব্যর্থতার জন্য কুমারকে দায়ী করা হয়েছে। অভিযোগ রয়েছে, তিনি পাকিস্তানের বিরুদ্ধে প্রতিশোধমূলক পদক্ষেপে আপত্তি জানিয়েছিলেন। এই সিদ্ধান্ত সেনাবাহিনীর পদমর্যাদার অভ্যন্তরে, বিশেষত জম্মু ও কাশ্মীর অঞ্চলে অসন্তোষ সৃষ্টি করেছে।

দায়িত্ব গ্রহণের পরপরই শ্রীনগরে এক বৈঠকে শর্মা সেনা অফিসারদের সুনির্দিষ্ট প্রশ্নের সন্তোষজনক জবাব দিতে ব্যর্থ হন, যা বাহিনীর মধ্যে আত্মবিশ্বাসের সঙ্কটের ইঙ্গিত দেয়। সেনা সদস্যদের প্রশ্ন ছিল, ‘কঠোর নিরাপত্তা থাকা সত্ত্বেও হামলা কিভাবে সম্ভব? যদি আমাদের এগিয়ে যেতে বলা হয়, তাহলে ক্যান্টনমেন্ট এলাকার নিরাপত্তা কে দেবে?

সেনাবাহিনীতে কুমারকে বলির পাঁঠা বানানো হয়েছে বলে মনে করছেন অনেকে। পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ‘অ্যাডভেঞ্চার’ পরিকল্পনায় তার আপত্তিই সরকারকে চটিয়ে থাকতে পারে বলে ধারণা। অন্যদিকে, কাশ্মিরের মুসলিম জনগণের মধ্যে ক্ষোভ বেড়েছে এবং ভারতীয় সেনাবাহিনী ও কেন্দ্রীয় সরকারের প্রতি বিরূপ মনোভাব তৈরি হয়েছে।

প্রতীক শর্মা দীর্ঘ সামরিক অভিজ্ঞতা নিয়ে এলেও বর্তমানে সেনাবাহিনীর মনোবলহীনতা ও কৌশলগত বিশৃঙ্খলার মধ্যে দায়িত্ব পেয়েছেন। তার নিয়োগ এমন সময়ে হয়েছে, যখন ভারত পাকিস্তানের বিরুদ্ধে কূটনৈতিক আক্রমণ জোরদার করেছে। এরই ধারাবাহিকতায় সিন্ধু পানি চুক্তি স্থগিত, আটারি-ওয়াঘা সীমান্ত বন্ধ এবং সার্ক ভিসা প্রকল্পে পাকিস্তানিদের জন্য সব ভিসা প্রক্রিয়া বন্ধ করে দেয়া হয়েছে।

এই পরিস্থিতিতে ভারতীয় সেনাবাহিনীর নেতৃত্ব, অভ্যন্তরীণ ঐক্য এবং বেসামরিক-সামরিক সম্পর্ক বড় চ্যালেঞ্জের মুখে। পহেলগাম কেবল প্রাণহানিই নয়, পুরো সেনা কাঠামোয় আস্থা ও নেতৃত্বের সঙ্কট তৈরি করেছে।

সূত্র : সামা নিউজ

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *


Scroll to Top