মামুনুল হক, ইসলামপন্থী, হেফাজত,

ভোট যদি অবাধ ও সুষ্ঠু হয়, ইসলামপন্থীদের বিজয় সুনিশ্চিত : মামুনুল হক

ভোট যদি অবাধ ও সুষ্ঠু হয়, ইসলামপন্থীদের বিজয় সুনিশ্চিত বলে আত্মবিশ্বাস প্রকাশ করেছেন বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের আমির ও হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের যুগ্ম মহাসচিব মুহাম্মদ মামুনুল হক।

তিনি বার্তা সংস্থা এএফপিকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেন, ‘আমরা আগামী নির্বাচনে সংসদে প্রবেশের ব্যাপারে আত্মবিশ্বাসী।’ তিনি আরো বলেন, ‘আমরা শরিয়া আইন বাস্তবায়নের জন্য নির্বাচনে অংশ নিচ্ছি। ভোট যদি অবাধ ও সুষ্ঠু হয়, তবে আমাদের বিজয় সুনিশ্চিত।’

ক্ষমতায় গেলে শরিয়া বাস্তবায়ন করার প্রতিশ্রুতি দিয়ে মামুনুল হক বলেন, আমরা কোরআনের আলোকে শরিয়া বাস্তবায়ন করব। একটি ইসলামী কল্যাণ রাষ্ট্রে ধর্ম বা বিশ্বাস যাই হোক না কেন, সকল নাগরিকের সাথে ন্যায্য আচরণ করা হবে।

ধর্ম অবমাননায় মৃত্যুদণ্ডের বিধানে কোনো আলোচনার অবকাশ নেই জানিয়ে তিনি বলেন, আল্লাহ, রাসুল (সা.) বা ইসলাম নিয়ে অবমাননাকর কথা বললে তার শাস্তি হবে মৃত্যুদণ্ড। এই বিষয়ে কোনো আলোচনার অবকাশ নেই।

নারীর উত্তরাধিকার ও বিবাহ-সংক্রান্ত আইনি সংস্কার নিয়ে গঠিত সরকারি নারী কমিশনের সুপারিশগুলোরও বিরোধিতা করছেন হেফাজতের এই নেতা। তিনি বলেন, কমিশনের প্রস্তাবগুলো ইসলামী পারিবারিক মূল্যবোধের প্রতি অসম্মানজনক। তারা আমাদের ধর্মীয় ঐতিহ্য ধ্বংস করে একটি পশ্চিমা সমাজ চাপিয়ে দিতে চায়।

বাংলাদেশের সংবিধানে জাতীয়তাবাদ, সমাজতন্ত্র, গণতন্ত্র ও ধর্মনিরপেক্ষতাকে রাষ্ট্রের চার মূলনীতির মধ্যে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। তবে ইসলামপন্থীরা এগুলোর সাথে ইসলামী আইনের সামঞ্জস্য চান না বলেও জানিয়েছেন মামুনুল হক।

এএফপির দাবি অনুযায়ী, বাংলাদেশে আসন্ন জাতীয় নির্বাচনকে ঘিরে রাজনৈতিকভাবে সক্রিয় হয়ে উঠছে ইসলামী দল ও গোষ্ঠীগুলো। প্রভাবশালী ইসলামপন্থী জোট হেফাজতে ইসলাম সম্প্রতি শরিয়া আইন বাস্তবায়নের প্রতিশ্রুতি দিয়ে সরব হয়েছে। জোটটি ঢাকায় একটি বৃহৎ গণসমাবেশের ঘোষণা দিয়েছে। এটি হতে পারে সংগঠনটির সাম্প্রতিক সময়ের সবচেয়ে বড় প্রকাশ্য শক্তি প্রদর্শন।

বাংলাদেশে সর্বশেষ জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় ২০২৪ সালের জানুয়ারিতে। বিরোধী দলগুলোর অনুপস্থিতিতে শেখ হাসিনা চতুর্থবারের মতো ক্ষমতায় আসেন। বিরোধীরা অভিযোগ করে, দমন-পীড়ন ও রাজনৈতিক স্বাধীনতার অভাবের কারণে তারা ভোট বর্জনে বাধ্য হয়।

মানবাধিকার সংস্থাগুলো শেখ হাসিনার দীর্ঘ ১৫ বছরের শাসনামলকে দমনমূলক বলে বর্ণনা করেছে। তার শাসনামলে ইসলামপন্থীদের ওপরও ব্যাপক ধরপাকড় চালানো হয়। হেফাজত নেতা মামুনুল হক ২০২১ সালে গ্রেফতার হন এবং তিন বছর কারাভোগ করেন।

তবে ২০২৪ সালের শেষ দিকে বিক্ষুব্ধ জনতা সাবেক প্রধানমন্ত্রী হাসিনার সরকারি বাসভবনে হামলা চালানোর পর তিনি ভারতে আশ্রয় নেন। বর্তমানে তিনি নয়াদিল্লিতে স্বেচ্ছানির্বাসনে আছেন।

সূত্র : এএফপি

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *


Scroll to Top