টুডেডেস্ক
মার্কিন অর্থনীতিতে আন্তর্জাতিক আস্থায় বড় ধাক্কা লাগে শুক্রবার, যখন রেটিং সংস্থা মুডিজ যুক্তরাষ্ট্রের শেষ ট্রিপল-এ রেটিং একধাপ কমিয়ে এএ১ করে। মুডিজ জানায়, ক্রমবর্ধমান সরকারি ঋণ ও সুদের চাপই এই সিদ্ধান্তের মূল কারণ।
ওয়াশিংটন থেকে এএফপি জানায়, এই রেটিং হ্রাস প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের অর্থনৈতিক সাফল্যের দাবিতে বড় আঘাত। একই দিনে কংগ্রেসে তার ব্যয় পরিকল্পনা বিল পাস হয়নি, যেটি আটকে যায় কট্টর রিপাবলিকানদের বিরোধিতায়।
মুডিজ ব্যাখ্যা করে, গত এক দশকে যুক্তরাষ্ট্রের ঋণ ও সুদ পরিশোধের হার অনেক বেড়েছে, যা সমমানের অন্যান্য দেশের তুলনায় বেশি। সংস্থাটির পূর্বাভাস, ২০৩৫ সালে বাজেট ঘাটতি জিডিপির ৯ শতাংশে পৌঁছাতে পারে; ২০২৪ সালে যা ছিল ৬.৪ শতাংশ। ঘাটতির পেছনে ঋণের সুদ, ‘এনটাইটেলমেন্ট’ খাতে ব্যয় এবং তুলনামূলক কম রাজস্বকে দায়ী করা হয়েছে।
ফলে ২০৩৫ সালের মধ্যে সরকারি ঋণ জিডিপির ১৩৪ শতাংশে উঠতে পারে, যেখানে ২০২৪ সালে ছিল ৯৮ শতাংশ।
রেটিং হ্রাসের পর হোয়াইট হাউজ সামাজিক মাধ্যম এক্স-এ পাল্টা প্রতিক্রিয়ায় মুডিজ অ্যানালিটিক্সের প্রধান অর্থনীতিবিদ মার্ক জান্ডিকে আক্রমণ করে বলে, তার বিশ্লেষণ কেউ গুরুত্ব দেয় না।
এর আগেও এমন ঘটনা ঘটেছে। ২০১১ সালে এসঅ্যান্ডপি ও ২০২৩ সালে ফিচ যুক্তরাষ্ট্রের রেটিং কমিয়েছিল। এবার সেই তালিকায় যুক্ত হলো মুডিজ। সংস্থাটি জানায়, বাজেট ঘাটতি ও সুদ নিয়ন্ত্রণে বারবার ব্যর্থ হয়েছে প্রশাসন ও কংগ্রেস। স্থায়ী সমাধানের কোনো ইঙ্গিত নেই।
রিপাবলিকান কংগ্রেসম্যান ফ্রেঞ্চ হিল বলেন, মুডিজের সিদ্ধান্ত দেখায়, আমাদের আর্থিক ঘর এখনো গুছিয়ে ওঠেনি। তিনি বলেন, হাউস রিপাবলিকানরা ঋণ সমস্যা সমাধান ও প্রবৃদ্ধিমুখী অর্থনীতি গড়ার লক্ষ্যেই কাজ করছে।
এই সংকটের মধ্যে ট্রাম্পের আলোচিত ‘বড় ও সুন্দর’ ব্যয় বিল কংগ্রেসে আটকে যায়। বিলটি ২০১৭ সালের কর ছাড় প্রকল্প সম্প্রসারণ এবং মেডিকেইড খাতে বড় কাটছাঁটের মাধ্যমে অর্থ সংগ্রহের পরিকল্পনা করছিল।
তবে মুডিজ কিছু ইতিবাচক দিকও তুলে ধরে বলেছে, যুক্তরাষ্ট্র এখনো বিশ্বের বড়, স্থিতিশীল ও উদ্যমী অর্থনীতি। ডলার বৈশ্বিক রিজার্ভ মুদ্রা হিসেবে শক্তিশালী অবস্থান ধরে রেখেছে। সংস্থাটি রেটিং কমালেও পূর্বের ‘নেগেটিভ’ দৃষ্টিভঙ্গি বদলে ‘স্টেবল’ করেছে।
সূত্র : এএফপি