মার্চ ফর গাজা কর্মসূচিতে কালো পতাকা এড়িয়ে যাওয়ার পরামর্শ কেন

টুডেনিউজ বিডি ডটনেট

মার্চ ফর গাজা কর্মসূচিতে কালো পতাকা এড়িয়ে যাওয়ার পরামর্শের কারণ ব্যাখ্যা করেছেন মাওলানা আব্দুল্লাহ আল মাসুদ।

শুক্রবার তিনি তার ফেসবুক পোস্টে এর কারণ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে বলেন, ‘মার্চ ফর গাজা’ কর্মসূচিতে কেবলমাত্র বাংলাদেশ ও ফিলিস্তিনের পতাকা বহন করার কথা বলায় অনেকেই সমালোচনা করছেন। সমালোচনার খোলাসা হলো, কালিমার পতাকা থাকলে যেহেতু আমেরিকা অসন্তুষ্ট হবে তাই আয়োজকরা আমেরিকাকে অসন্তুষ্ট না জকরতে এমন সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেছে।

এবার আসুন আবেগকে এক পাশে রেখে এই দাবীর বাস্তবতা তলিয়ে দেখা যাক৷

আমেরিকা ফিলিস৩-এ গণহত্যা চালাচ্ছে। এবং ঘোষণা দিয়েছে, যারা ফিলিস৩কে সমর্থন করবে তাদের বিরুদ্ধে নানান ব্যবস্থা নিবে৷ যেমন ভিসা দিবে না ইত্যাদি। তো মার্চ ফর গাজা প্রোগ্রামটাই তো সত্তাগতভাবে এমন যে, আমেরিকা এর প্রতি সন্তুষ্ট না৷ যদি আমেরিকা অসন্তুষ্ট না হোক এটাই আয়োজকদের চাওয়া হয়, তাহলে সর্বপ্রথম এই ধরনের প্রোগ্রাম আয়োজন থেকেই সরে আসার কথা। ফলে আমেরিকাকে সন্তুষ্ট রাখার যে দাবী করা হচ্ছে, এই দাবীটাই আসলে অমূলক।

এখন কথা হচ্ছে, এই ধরনের কথা তাহলে কেন বলা হচ্ছে? এর পেছনে হেতু কী? সেটা একটু তুলে ধরি। তারও আগে কয়েকটা জিনিস জানিয়ে রাখি৷

এই আয়োজন একক ঘরানার কারও না। এতে বাংলাদেশের নানান মতপথের মানুষ মিলিত হয়েছে৷ নানান ঘরানার সর্বোচ্চ পর্যায়ের আলেমরা এতে নেতৃত্বে আছেন।

বাইতুল মোকাররমের খতিব মাওলানা আবদুল মালেক সাহেব এতে সভাপত্বি করবেন৷ কওমী মাদরাসার শীর্ষ মুরুব্বিরা এতে সংহতি জানিয়েছেন।

দেশের বর্তমান পরিস্থিতিকে সামনে রেখে নিরাপত্তা নিশ্চিতের লক্ষ্যে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকেও অনুরোধ করা হয়েছে তারা যেন সর্বোচ্চ নিরাপত্তা প্রদান করে৷

এই ধরনের বড় প্রোগ্রামগুলোতে নানানজন নানান এজেন্ডা নিয়ে হাজির হয়। সুযোগ কাজে লাগানোর চেষ্টা করে৷ এটা অস্বীকারের সুযোগ নেই। ইতিমধ্যে লীগের অনেকে ঢাকায় এসেছে বলেও শোনা যাচ্ছে। তারা কোন নানকোন ঝামেলা বাঁধানোর সর্বোচ্চ চেষ্টা করবে৷

আমভাবে কালিমার পতাকার প্রতি কালো এলার্জি থাকা তার ঈমানকে প্রশ্নবিদ্ধ করে। তবে এদেশে দায়শপন্থী ছেলেপেলে যে একেবারে নেই সেটা তো আমরা সচরাচর দেখছিই৷ আবার আছে এইচটির মতো সংগঠনগুলো। যাদের নিজস্ব পদ্ধতির দাবি দাওয়া আছে৷ সবাই এই সুযোগকে যার যার কাজে লাগানোর চেষ্টা করবে৷ প্রোগ্রামের বৃহত্তর সফলতা ও শৃঙ্খলা রক্ষার্থেই এসব বিষয়ও বিবেচনাতে রাখতে হচ্ছে।

যে কোন দুর্ঘটনা বা বিশৃঙ্খলা তৈরি হলে এর দায় আয়োজকদের উপর চাপানোর জন্য বামরা উঁৎ পেতে আছে৷ তাই যারা আয়োজক তাদেরকে সতর্কভাবে পা ফেলতে হচ্ছে৷ কোন অঘটনের জন্য কিন্তু যারা সাধারণ অংশগ্রহণকারী/সমর্থন এরা দোষী হবে না, দোষী হবে আয়োজকরা৷

এখন এই জিনিসকে যেভাবে অনেকে চিত্রায়ন করতে উঠে পড়ে লেগেছে সেটা খুবই দুঃখজনক। যারা আয়োজকদেরকে আমেরিকার সন্তুষ্টির প্রতি লক্ষ্য রাখছে বলছেন, তারা নিশ্চিত অপবাদ দিচ্ছেন। এটা গিয়ে পড়ছে দেশের বড় বড় সব আলেমদের উপর। যাদের দ্বীনের প্রতি দরদ/খেদমত পোস্টদাতাদের চেয়ে বহুগুণ বেশি।

মনে রাখবেন, ফেসবুকে নামে-বেনামে বা পরিচয় আড়ালে রেখে পোস্ট দিয়ে অনেক কিছু বলা যায়, যেটা বাস্তব ময়দান এরচে অনেক অনেক ভিন্ন৷ আল্লাহ আমাদের এসব অতি আবেগী ভাইদেরকে সঠিক বুঝ দান করুন। আমীন।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *


Scroll to Top