‘মার্চ ফর গাজা’, মোড়ে মোড়ে নিরাপত্তা তল্লাশি চলছে

অনলাইন প্রতিবেদক

গাজায় চলমান বর্বরোচিত ইসরাইলি আগ্রাসনের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক জনমত গঠনের পাশাপাশি মানবিক সহানুভূতি জাগ্রত করা ও ফিলিস্তিনিদের সাথে সংহতি প্রকাশ করতে রাজধানীতে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে ‘মার্চ ফর গাজা’।

এ কর্মসূচিতে যোগ দিতে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা থেকে মানুষ সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের দিকে ছুটছে। সবার নিরাপত্তার স্বার্থে মোড়ে মোড়ে নিরাপত্তা তল্লাশি চালিয়ে যাচ্ছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা।

আজ দুপুরে কারাইল মোড়ে এমন দৃশ্য দেখা গেছে।

সরেজমিনে দেখা গেছে, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য ও বাংলাদেশ সেনা বাহিনী সদস্যরা মোড়ে মোড়ে তল্লাশি চালিয়ে যাচ্ছে। মাথায় কালো ব্যাচ এবং হাতে কালো পতাকা দেখলে সেটি নিয়ে জব্দ করছেন।

মার্চ ফর গাজা কর্মসূচির আহ্বান জানিয়েছে ‘প্যালেস্টাইন সলিডারিটি মুভমেন্ট বাংলাদেশ’ নামের একটি প্ল্যাটফর্ম। আয়োজকরা জানিয়েছেন, গাজার নিরস্ত্র জনগণের পাশে দাঁড়ানো ও আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ব্যাপক জনমত তৈরির লক্ষ্যেই এই আয়োজন।

এতে সভাপতিত্ব করবেন জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের খতিব মাওলানা আব্দুল মালেক। এটি ঢাকার রাস্তায় ফিলিস্তিনের পক্ষে সবচেয়ে বড় জনসমাবেশ হতে যাচ্ছে বলে প্রত্যাশা ব্যক্ত করেছেন আয়োজক ও সংশ্লিষ্টরা।

এই কর্মসূচি শুরু হওয়ার আগেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছে। দেশের খ্যাতনামা আলেম-ওলামা, ইসলামিক স্কলার, খেলোয়াড়, মিডিয়া ব্যক্তিত্বসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ এতে অংশগ্রহণের আহ্বান জানিয়েছেন। দল, মত নির্বিশেষে সর্বস্তরের মানুষ এক কাতারে এসে ফিলিস্তিনি জনগণের প্রতি সংহতি প্রকাশ করবেন।

বাংলাদেশের ইতিহাসে এই প্রথম সব রাজনৈতিক-অরাজনৈতিক সর্বস্তরের মানুষ এক কাতারে এসে ফিলিস্তিনি জনগণের সাথে সংহতি প্রকাশ করবেন। সমাবেশকে ঘিরে আয়োজক সংগঠনের ফেসবুক পেজে আলেম, সেলিব্রেটি ও বিশিষ্টজনদের সমর্থনমূলক ভিডিও বার্তা প্রকাশ করা হচ্ছে। সেখানে দৈনিক আমার দেশের সম্পাদক মাহমুদুর রহমান, জাতীয় দলের ক্রিকেটার মাহমুদ উল্লাহ রিয়াদ, মেহেদী হাসান মিরাজ, নাহিদ রানা, তাইজুল ইসলাম, ইসলামী বক্তা মিজানুর রহমান আজহারী, আস-সুন্নাহ ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান শায়খ আহমাদুল্লাহ, এনসিপির দক্ষিণাঞ্চলের নেতা হাসনাত আবদুল্লাহ, অভিনেতা তামিম মৃধা ও টেন মিনিট স্কুলের প্রতিষ্ঠাতা আয়মান সাদিক প্রমুখের ভিডিও শেয়ার করা হয়েছে।

আয়োজকদের আশা, ঢাকার এই গণজমায়েত গাজার নিপীড়িত জনগণের পাশে দাঁড়ানোর এক শক্তিশালী বার্তা হিসেবে বিশ্বজুড়ে প্রতিধ্বনিত হবে।

এই কর্মসূচিতে অংশগ্রহণকারীদের জন্য কিছু দিকনির্দেশনা দেয়া হয়েছে। সেগুলো হলো,

১. অংশগ্রহণকারীরা নিজ দায়িত্বে ব্যক্তিগত প্রয়োজনীয় সামগ্রী যেমন পানি, ছাতা, মাস্ক সাথে রাখতে এবং পরিবেশ পরিচ্ছন্ন রাখতে আহ্বান জানানো হয়েছে।
২. যেকোনো পরিস্থিতিতে ধৈর্য ও শৃঙ্খলা বজায় রেখে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও স্বেচ্ছাসেবকদের সাথে সর্বাত্মক সহযোগিতা করার আহ্বান জানানো হয়েছে।
৩. রাজনৈতিক প্রতীকবিহীন, সৃজনশীল ব্যানার ও প্ল্যাকার্ড ব্যবহার করতে বলা হয়েছে। শুধুমাত্র বাংলাদেশ ও ফিলিস্তিনের পতাকা বহনের মাধ্যমে সংহতি প্রকাশ করতে অনুরোধ করা হয়েছে।
৪. দুষ্কৃতকারীদের অপতৎপরতা প্রতিহত করতে সক্রিয় থেকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সহযোগিতা নিতে বলা হয়েছে।

উল্লেখ্য, ‘মার্চ ফর গাজা’ কর্মসূচিতে কিছুটা পরিবর্তন আনা হয়েছে। শনিবার শাহবাগ থেকে মানিক মিয়া অ্যাভিনিউ পর্যন্ত এই ‘মার্চ’ হওয়ার কথা ছিল। নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বেলা ৩টায় সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে গণজমায়েত করা হবে। মানিক মিয়া অ্যাভিনিউ অভিমুখে যাত্রা করা হবে না।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *


Scroll to Top