টুডেনিউজ ডেস্ক
মৈত্রী যাত্রা— এই নামটি শুনলে মনে হয় যেন মানবতা, সম্প্রীতি আর বন্ধুত্বের বার্তা নিয়ে এসেছে। কিন্তু প্রশ্ন হলো, আসলে কার সাথে এই মৈত্রী? পশ্চিমা সমাজের বিকৃত ও ধ্বংসাত্মক চিন্তাভাবনার সাথে? নাকি বাংলাদেশের রক্ষণশীল, ধর্মভীরু সমাজব্যবস্থার বিপরীতমুখী যেকোনো মতবাদের সাথে?
আজকের বাংলাদেশ এতটা সরল নয়। মানুষ বোঝে, এই তথাকথিত প্রগতিশীলদের আদর্শ আসলে কী। তারা পশ্চিমা বিশ্বের সমস্ত ‘আধুনিক’ কিন্তু নৈতিকভাবে প্রশ্নবিদ্ধ বিষয়গুলো— যেমন সমকামিতা, গর্ভপাত — এসবের আইনগত বাস্তবায়ন চায়। এই প্রচেষ্টা নতুন কিছু নয়, বরং নারীবাদীদের বহুদিনের চিৎকার-চেঁচামেচির দেশীয় সংস্করণ মাত্র। নারীবাদীরা কিছু ক্ষেত্রে সফল হয়েছে, আর কিছু ক্ষেত্রে এখনো চেষ্টা করে যাচ্ছে।
তবে তাদের একটি মৌলিক সমস্যা আছে — তারা “নারী” শব্দটি ব্যবহার করেন ঠিকই, কিন্তু এর প্রকৃত সংজ্ঞা বোঝেন না। যে কেউ নিজেকে নারী দাবি করলেই তারা সেটাকে মেনে নেন। তাত্ত্বিক বিচারে, বাস্তবতা বিবর্জিত এই মনোভাব কেবল বিভ্রান্তিই বাড়ায়।
তারা যেমন নারী-পুরুষের অবাধ সম্পর্ককে ‘ভালোবাসা’ ও ‘স্বাধীনতা’র নামে জাস্টিফাই করেন, তেমনই নারী-নারী বা পুরুষ-পুরুষের সম্পর্ককেও একইভাবে স্বাভাবিকীকরণে ব্যস্ত থাকেন। অথচ এই একই “নারী” শব্দ ব্যবহার করেই তারা নারীদের প্রকৃত দায়িত্ব ও সামাজিক ভূমিকাকে হেয় প্রতিপন্ন করেন।
যদি কোনো নারী শিক্ষিত হওয়ার পর সংসার করতে চান, তবে তাকে ‘স্বামীর দ্বারা শোষিত’ বলে আখ্যায়িত করা হয়। যদি কেউ একাধিক সন্তান জন্ম দেন, তাকেও বিদ্রূপ শুনতে হয়। নারীত্বের নিজস্বতা ও স্বাভাবিক প্রবণতাকে যেন অযোগ্যতা হিসেবে উপস্থাপন করাই তাদের মূল অভিসন্ধি। যেন নারী হতে চাওয়া নয়, পুরুষের মতো আচরণ করলেই কেবল “সফল নারী” হওয়া যায়!
সম্প্রতি এদের সোশ্যাল মিডিয়া পেজে দেখা গেলো — বিশ্ববিদ্যালয়ের হলে মেয়েদের জন্য রাতে গেট বন্ধ রাখা নিয়ে আপত্তি তুলেছে। এই তথাকথিত ‘শিক্ষিত’ পোস্টের বিরুদ্ধেই অভিভাবকদের কথা বলা উচিত। মেয়েদের মর্যাদা আছে, নিরাপত্তা একটি বাস্তব ও গুরুত্বপূর্ণ বিষয় — সেটা নারীবাদীরা বুঝতেই চায় না। অথচ তারাই আসে নারীদের অধিকারের কথা বলতে!
ধর্মের প্রসঙ্গে গেলে, শরীয়া আইন চালুর কথা উঠলেই তারা বলে, “বাংলাদেশ তো মুসলিম রাষ্ট্র না।” হ্যাঁ, দুঃখজনক সত্য — দেশের অধিকাংশ মানুষ ইসলামকে ভালোবাসলেও এখনো এখানে শরীয়া আইন চালু হয়নি। কারণ হতে পারে রাজনৈতিক বাধা, কিংবা নীতিনির্ধারকদের ইচ্ছার অভাব। তবে এই সুযোগে যারা ইসলামকে তুচ্ছ করে, তাদের বলি — বাংলাদেশ যেমন পুরোপুরি ইসলামী রাষ্ট্র না, তেমনি ধর্মহীনদের দেশও না। দেশের সামান্য সংখ্যক ধর্মহীনদের গলা অতিরিক্ত বড় হয়ে যাওয়া মোটেই স্বাভাবিক নয়।