‘কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার গডফাদার’ উপাধিটি সম্প্রতি জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। তবে প্রযুক্তিবিদদের মতে, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার জটিলতা ও বহুমাত্রিকতার কারণে এই কৃতিত্ব কেবল একজনের নয়। বরং এটি অনেক বিজ্ঞানীর সম্মিলিত প্রয়াসের ফল।
বছরের পর বছর ধরে গবেষণা ও উদ্ভাবনের মাধ্যমে এআই আজকের অবস্থানে এসেছে। নীচে এমন ১০ জন ব্যক্তির সংক্ষিপ্ত পরিচয় দেয়া হলো, যারা এআই-এর বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন।
১. জিওফ্রে হিন্টন
টরন্টো বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক এমেরিটাস। নিউরাল নেটওয়ার্ক নিয়ে গবেষণার জন্য খ্যাত। ২০১৮ সালে ইয়ান লেকুন ও ইয়োশুয়া বেঙ্গিওর সাথে টুরিং পুরস্কার পান। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে তিনি এআই নিরাপত্তার একজন প্রবক্তা হিসেবে পরিচিত।
২. ইয়োশুয়া বেঙ্গিও
মন্ট্রিল বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার বিজ্ঞানের অধ্যাপক। নিউরাল এআই ও যোগাযোগ কাঠামো নিয়ে কাজ করেছেন। ২০২২ সালে এআই-তে বিশ্বের সর্বাধিক উদ্ধৃত বিজ্ঞানী হন। তিনি এলিমেন্ট এআই প্রতিষ্ঠা করেন এবং পরে ‘সার্ভিস নাউ’ কোম্পানিটি অধিগ্রহণ করে।
৩. স্যাম অল্টম্যান
ওপেনএআই-এর সিইও। যদিও তিনি বিজ্ঞানী নন, তবুও চ্যাটজিপিটির ঘোষণা (২০২২) এআই-এর বিকাশে বিপ্লব ঘটায়। এআই নিয়ে সম্ভাব্য ঝুঁকি নিয়ে ব্যক্তিগতভাবে উদ্বিগ্ন বলেও জানিয়েছেন।
৪. ইয়ান লেকুন
নিউ ইয়র্ক বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক। ২০১৮ সালে টুরিং পুরস্কারপ্রাপ্ত। মেটাতে এআই বিভাগের প্রধান ছিলেন এবং ভিডিওভিত্তিক এআই প্রশিক্ষণ প্রযুক্তি তৈরি করেন। এআই ঝুঁকি নিয়ে নিরপেক্ষ অবস্থান পোষণ করেন।
৫. ফেই-ফেই লি
স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার বিজ্ঞানের অধ্যাপক। ইমেজনেট চ্যালেঞ্জ তৈরিতে বিশেষ অবদান রয়েছে। গুগলের এআই বিভাগের ভাইস প্রেসিডেন্ট ও টুইটারের বোর্ড সদস্য ছিলেন।
৬. স্টুয়ার্ট রাসেল
ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়, বার্কলের অধ্যাপক। এআই ও মানুষের সহাবস্থান নিয়ে কাজ করেছেন। ‘A Modern Approach to Artificial Intelligence বইয়ের সহ-লেখক। এআই প্রযুক্তির ঝুঁকি সম্পর্কে বহুবার সতর্ক করেছেন।
৭. পিটার নরভিগ
স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্টার ফর হিউম্যান-সেন্টার্ড এআই-এর ফেলো। গুগলে অনুসন্ধান অ্যালগরিদম ও এআই অনুবাদে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন। এআই শিক্ষা ও গবেষণায় একাধিক প্রতিষ্ঠানে যুক্ত ছিলেন।
৮. তামানিত গেব্রু
গুগলের এথিক্যাল এআই টিমের গবেষক ছিলেন। মেশিন লার্নিংয়ে পক্ষপাত নিয়ে গবেষণা করে বিতর্কের মুখে পড়েন। পরে ডিস্ট্রিবিউটেড এআই রিসার্চ ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠা করেন।
৯. অ্যান্ড্রু এনজি
গুগল ব্রেন প্রকল্পের সহ-প্রতিষ্ঠাতা। নিউরাল নেটওয়ার্ক ও মেশিন লার্নিং নিয়ে কাজ করেছেন। বাইদুতে প্রধান বিজ্ঞানী ছিলেন। কোর্সেরা ও ডিপলার্নিং এআই-এর মাধ্যমে এআই শিক্ষা ছড়াতে ভূমিকা রাখেন।
১০. ড্যাফনি কোলার
ইনসিট্রো নামক এআই-ভিত্তিক ওষুধ কোম্পানির সহ-প্রতিষ্ঠাতা। গুগলের ক্যালিকোতে প্রধান কম্পিউটিং অফিসার ছিলেন। ৩০০টিরও বেশি গবেষণাপত্র প্রকাশ করেছেন। এআই-কে মানব জীবনের উন্নয়নে সহায়ক বলে মনে করেন।
সূত্র : আল জাজিরা