রমজান মাসের সর্বশ্রেষ্ঠ রাতগুলোর মধ্যে একটি হলো শবে কদর। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘তোমরা রমজান মোবারকের শেষ দশ দিনের বেজোড় রাতগুলোতে শবে কদর তালাশ করো।’ (সহীহ বুখারী, হাদীস নং ২০১৭; সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ১১৬৯)
অধিকাংশ উলামায়ে কেরামের মতে, রমজান মাস ২৯ দিনে হোক বা ৩০ দিনে হোক, শেষ দশ দিন একুশতম রাত থেকে শুরু হয়। এই হিসেবে শবে কদর ২১, ২৩, ২৫, ২৭ ও ২৯ তারিখের রাতগুলোতে অনুসন্ধান করা উচিত। যদি মাস ২৯ দিনে হয়, তবুও এই দিনগুলোকেই শেষ দশ দিন ধরা হবে।
কিন্তু প্রসিদ্ধ ইসলামী পণ্ডিত আল্লামা ইবনে হাযম রহ. বলেন, ‘আশারা’ শব্দের অর্থ হলো দশ। সুতরাং রমজান মাস যদি ৩০ দিনে হয়, তবে শেষ দশ দিন ২১ থেকে ৩০ তারিখ পর্যন্ত গণ্য হবে। কিন্তু যদি মাস ২৯ দিনে হয়, তবে শেষ দশ দিন বিশতম রাত থেকে শুরু হবে। এই হিসেবে বেজোড় রাত হবে ২০, ২২, ২৪, ২৬ ও ২৮।
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম শবে কদর অনুসন্ধানের জন্য রমজান মাসের শেষ দশকে ইতেকাফ করতেন। (সহীহ বুখারী, হাদীস নং ২০২৫; সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ১১৭১)। এ বিষয়ে সর্বমহলের মতামত হলো, সেই ইতেকাফ একুশতম রাত থেকে শুরু হতো।
এই কারণেই অধিকাংশ উলামায়ে কেরামের মতে, একুশতম রাত থেকে বেজোড় রাতগুলোতে শবে কদর হওয়ার সম্ভাবনা বেশি এবং এই রাতগুলোকেই অধিক অগ্রাধিকারযোগ্য মনে করা হয়। তবে অন্যান্য রাতগুলোতেও শবে কদর হওয়ার সম্ভাবনা থাকতে পারে। তাই সর্বোত্তম উপায় হলো বিশতম রাত থেকে ঈদের রাত পর্যন্ত প্রতিটি রাত জেগে ইবাদতে মগ্ন থাকা।
যে ব্যক্তি শবে কদরের আশা রাখে, তার জন্য মাত্র ১০-১১টি রাত জেগে ইবাদতে কাটানো কঠিন কাজ নয়। এই মহিমান্বিত রাতে ইবাদত করলে হাজার মাসের ইবাদতের সওয়াব পাওয়া যায়। সুতরাং প্রত্যেক মুসলিমের উচিত, এই রাতগুলোতে বেশি বেশি নফল নামাজ, কুরআন তিলাওয়াত, দোয়া ও ইস্তিগফার করা। আল্লাহ তায়ালা আমাদের সবাইকে শবে কদরের ফজিলত লাভের তাওফিক দান করুন। আমীন।