শায়খ আবু তাসনিম
একজন মুসলমান রাসূল সা.কে তার প্রাণের চেয়েও বেশি ভালোবাসেন। তাই মহানবী সা. এর জীবনের যেকোনো বিষয়ই মুমিনকে আবেগাপ্লুত করে ফেলে। মুমিন বিষয়টিকে গুরুত্বের সহিত গ্রহণ করে। অনেক ক্ষেত্রে তা আমলের মধ্য দিয়ে যাপনও করেন।
রাসূল সা. এর জীবনের অন্যতম মোবারকময় ঘটনা তাঁর শুভাগমন। এ দিনটির সাথে তাই মুসলমানদের অনেক আবেগ জড়িয়ে আছে। রাসূল সা. সোমবার সুবহে সাদিকের সময় জন্মগ্রহণ করেছেন। তাই এ দিন রোজা রাখার মাধ্যমে মুসলিমরা নবীজি সা. এর প্রতি ভালোবাসা প্রকাশ করে।
তবে রাসূল সা. এর জন্ম তারিখটি কী ছিল, এ নিয়ে মতপার্থক্য রয়েছে। নানা মনীষা নানা মত ব্যক্ত করেছেন। এর মধ্যে সবচেয়ে বিশুদ্ধ মত হলো, নবীজি সা. ৮ রবিউল আওয়াল জন্মগ্রহণ করেছেন। এ বিষয়ে আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রা. ও জুবায়ের ইবনে মুতয়িম রা. এর বক্তব্য পাওয়া যায়। সেজন্য বিখ্যাত হাদিস বিশারদ আল্লামা কাসতাল্লানী রহ. এই মতকেই প্রাধান্য দিয়েছেন। (সিরাতে মুস্তফা, ১ : ৫৪; ইসলামিক ফাউন্ডেশন)
তবে জনসাধারণের মাঝে প্রসিদ্ধ হচ্ছে, মহানবী সা. ১২ রবিউল আউয়াল জন্মগ্রহণ করেছেন। এ বিষয়ে মহানবী সা.-এর জীবনী বিশেষজ্ঞ মুহাদ্দিস ইবনে ইসহাক রহ. বলেন, মহানবী সা. হস্তিবাহিনীর ঘটনার বছর ১২ রবিউল আউয়াল জন্মগ্রহণ করেন। (সিরাতে ইবনে হিশাম, ১ : ১৫৮) এছাড়া বিখ্যাত ইতিহাসবিদ আল্লামা ইবনে খালদুনের মতেও মহানবী সা. ১২ রবিউল আওয়াল মাসে জন্মগ্রহণ করেন। (সিরাতে সাইয়্যিদুল আম্বিয়া, পৃষ্ঠা ১১৭)
আর প্রসিদ্ধ সিরাতবিষয়ক গ্রন্থ আর রাহিকুল মাখতুমে বলা হয়েছে, রাসূল সা. মক্কায় বনি হাশিমের ঘাঁটিতে সোমবার সকালে ৯ রবিউল আউয়াল জন্মগ্রহণ করেন। (আর রাহিকুল মাখতুম, খণ্ড-১, পৃষ্ঠা ৪৫)
আর তাফসিরে মা‘আরিফুল কোরআনে রাসূল সা.-এর জন্মদিন বলা হয়েছে, রবিউল আওয়াল মাসের ৯ তারিখ সোমবার। একই কথা বলেছেন বিশিষ্ট আলেম সফিউর রহমান মোবারকপুরী। তিনি তার সিরাতবিষয়ক গ্রন্থ আর রাহিকুল মাখতুমে বলেছেন, রাসূল সা. মক্কায় বনি হাশিমের ঘাঁটিতে সোমবার সকালে ৯ রবিউল আউয়াল জন্মগ্রহণ করেন। (আর রাহিকুল মাখতুম, খণ্ড-১, পৃষ্ঠা ৪৫)
এছাড়া ২, ১০, ১১ ও ১৮ রবিউল আওয়াল মাসে জন্মগ্রহণের বিষয়েও মতামত পাওয়া যায়। তবে এ মতামতগুলো গ্রহণযোগ্য নয়।
জ্যোতির্বিজ্ঞানীদের মতে, সৌর বর্ষ হিসেবে রাসূল সা. ৫৭০ খ্রিস্টাব্দের ২০ সেপ্টেম্বর জন্মগ্রহণ করেন।