সিলেট সংবাদদাতা
হযরত শাহজালাল (রহ.) মাজার প্রাঙ্গণে শিরক, বেদআত ও অসামাজিক কার্যকলাপ বন্ধে যৌথভাবে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার সকাল ১১টায় সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এক সমন্বিত সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সভায় উপস্থিত ছিলেন তাওহিদি কাফেলা, মাজার কর্তৃপক্ষ, দরগাহ মসজিদ ও মাদরাসা কমিটি এবং প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরের দায়িত্বশীলরা।
সভায় সভাপতিত্ব করেন সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার জনাব রেজাউল করিম। সভার শুরুতেই তাওহিদি কাফেলার পক্ষ থেকে উত্থাপন করা হয় ৭ দফা দাবি ও প্রস্তাবনা, যা সর্বসম্মতভাবে গৃহীত হয়।
তাওহিদি কাফেলার প্রস্তাবিত মূল দাবি
১. মাজারে সিজদা ও অন্যান্য শিরক-বিদআত নিষিদ্ধ ঘোষণা
২. মাজার চত্বরে মদ-গাঁজার আসর সম্পূর্ণরূপে বন্ধ
৩. গান-বাজনা ও বাদ্যযন্ত্রের ব্যবহার নিষিদ্ধ
৪. নারী-পুরুষের অবাধ চলাফেরা রোধ
৫. গিলাফ ছড়ানো ও ব্যান্ড পার্টির মতো শরিয়তবিরোধী কর্মকাণ্ড বন্ধ
মাজার কর্তৃপক্ষের করণীয় হিসেবে নির্ধারিত
-শিরক, বেদআত, মাদক ও গান-বাজনা নিষিদ্ধ উল্লেখ করে সাইনবোর্ড স্থাপন
-লাইভ সম্প্রচারে এসব নিষেধাজ্ঞা ঘোষণা
-মহিলাদের জন্য পর্দার ব্যবস্থা
-যিয়ারতের আদব মাইকে প্রচার
-জুমার খুতবার পূর্বে সচেতনতামূলক আলোচনা
-ওরস উপলক্ষে আওলিয়া কেরামের জীবন ও দোয়ার বিশেষ আয়োজন
-সার্বিক বিষয় তদারকির জন্য একটি সমন্বিত কমিটি গঠন
সভায় উপস্থিত সকল পক্ষ একাত্মতা ঘোষণা করে এসব প্রস্তাব বাস্তবায়নে সম্মতি জ্ঞাপন করেন। মাজারের খাদেমবৃন্দ ও সংশ্লিষ্ট প্রশাসনিক কর্মকর্তারা প্রতিটি প্রস্তাব বাস্তবায়নের প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেন এবং মাজারের পবিত্রতা রক্ষায় সবার সহযোগিতা কামনা করেন।
মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনারের নেতৃত্বে গঠিত হয় একটি তদারকি কমিটি, যাতে অন্তর্ভুক্ত রয়েছে—মাজার কর্তৃপক্ষ, তাওহিদি কাফেলা, ইমাম সমিতি, কওমি ঐক্য পরিষদ, দরগাহ মসজিদ ও মাদরাসা, র্যাব এবং সেনাবাহিনীর প্রতিনিধি।
তাওহিদি কাফেলার আহ্বায়ক মাওলানা মুশতাক আহমদ খান, উপদেষ্টা মাওলানা রেজাউল করিম জালালি, যুগ্ম আহ্বায়ক হাফেজ মাওলানা আসজাদ আহমদ, সদস্য সচিব শাহ মমশাদ আহমদ, যুগ্ম সদস্য সচিব মাওলানা নেয়ামাতুল্লাহ খাসদবিরি, ইমাম সমিতির সভাপতি মাওলানা হাবীব আহমদ শিহাব, যুক্তরাজ্য হেফাজতে ইসলামের সাধারণ সম্পাদক মাওলানা গোলাম কিবরিয়া, শামীমাবাদ ও দারুল হুদা মাদরাসার মুহতামিমগণ, মুফতি মনসুর আহমদ, মুফতি রশিদ আহমদ, দরগাহ মসজিদের তত্ত্বাবধায়ক মুফতি কয়েস আহমদ এবং মাজার কমিটির প্রতিনিধি খাদেম জামান চৌধুরী।
সভা শেষে তাওহিদি কাফেলার আহ্বায়ক মাওলানা মুশতাক আহমদ খান মুনাজাত পরিচালনা করেন, যেখানে মাজারের পবিত্রতা রক্ষা এবং ইসলামী বিধানের যথাযথ বাস্তবায়নের জন্য দোয়া করা হয়।