সিলেটের হযরত শাহজালাল (রহ.)-এর দরগায় ৭০৬তম উরুস মাহফিল উপলক্ষে এক সমন্বয় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
বৃহস্পতিবার বেলা ১১টায় সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সের কনফারেন্স রুমে ওই সমন্বয় সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সভায় সভাপতিত্ব করেন সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার মো: রেজাউল করিম, পিপিএম-সেবা।
আগামী ১৮ ও ১৯ মে অনুষ্ঠিতব্য উরুসকে ঘিরে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি, ধর্মীয় শিষ্টাচার ও সার্বিক নিরাপত্তা ব্যবস্থার বিষয়গুলো নিয়ে সভায় বিস্তারিত আলোচনা হয়। বিশেষভাবে মাজারের অনৈসলামিক কার্যক্রম বন্ধ এবং শান্তিপূর্ণ জিয়ারতের পরিবেশ নিশ্চিত করার ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়।
সভায় হযরত শাহজালাল (রহ.) এর মাজারে অনৈসলামিক কার্যকলাপ যেন না ঘটে, তা নিশ্চিত করতে একটি বিশেষ মনিটরিং কমিটি গঠন করা হয়, যার সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব দেয়া হয় পুলিশ কমিশনারকে। এ কমিটিতে পুলিশের পাশাপাশি র্যাব, সেনাবাহিনী, সিটি কর্পোরেশন, মাজার কমিটি, শাহজালাল তাওহিদি কাফেলা, ইমাম সমিতি, মাজার মসজিদ, দরগাহ মাদরাসা ও কওমী ঐক্য পরিষদের প্রতিনিধিরা অন্তর্ভুক্ত রয়েছেন।
সভায় পুলিশ কমিশনার বলেন, উরুস চলাকালীন দায়িত্বপ্রাপ্ত সকল সদস্য যেন নিষ্ঠা ও আন্তরিকতার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করেন। নিরাপত্তা নিশ্চিতে প্রয়োজনীয় সংখ্যক পুলিশ সদস্য মোতায়েন থাকবে এবং গোটা এলাকা ড্রোন ক্যামেরার মাধ্যমে নজরদারিতে রাখা হবে।’
তিনি আরো বলেন, ‘কোনো ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা যেন না ঘটে সে বিষয়ে সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে।’ এছাড়া সাদা পোশাকে গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরাও দায়িত্ব পালন করবেন বলে জানানো হয়।
এ সময় তাওহিদি কাফেলার পক্ষ থেকে হযরত শাহজালাল (রহ.) এর মাজারের পবিত্রতা রক্ষায় কিছু দাবি উত্থাপন করা হয়। সেগুলো হলো,
১। মাজারে সেজদা ও যাবতীয় শিরক ও বিদআতি কার্যকলাপ নিষিদ্ধ করা।
২। মাজার প্রাঙ্গণে মদ ও গাঁজার আসর বন্ধ করা।
৩। গান-বাজনা ও বাদ্যযন্ত্রের ব্যবহার সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করা।
৪। নারী-পুরুষের অবাধ চলাফেরা নিয়ন্ত্রণে আনা।
৫। শরীয়ত অনুযায়ী কাবা শরীফ ছাড়া অন্য কোথাও গিলাফ চড়ানো বৈধ নয়। অথচ মাজারে নিয়মিত ব্যান্ড পার্টিসহ গিলাফ চড়ানো হয়। এই বিদআতি প্রথা বন্ধ করা।
সভায় উপস্থিত ছিলেন সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের বিভিন্ন পদমর্যাদার কর্মকর্তা, র্যাব-৯, ডিজিএফআই, এনএসআই, সেনাবাহিনীর ৩৪ বীর, সিলেট জেলা স্টেডিয়াম আর্মি ক্যাম্প, সিলেট সিটি কর্পোরেশন, সিভিল সার্জন সিলেট, ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স সিলেট, হযরত শাহজালাল (রহ.) মাজার কমিটি, শাহজালাল তাওহিদি কাফেলা, দরগাহ মসজিদ, শাহজালাল দরগা মাদ্রাসা, কওমি ঐক্য পরিষদ এবং ইসলামী ফাউন্ডেশন সিলেটসহ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সংস্থার সদস্য ও প্রতিনিধিরা।