আগামী সপ্তাহে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের শাস্তিমূলক শুল্ক কার্যকর হওয়ার আগে বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্রের সাথে বাণিজ্য চুক্তি সইয়ের চেষ্টা করছে বলে জানিয়েছেন বাণিজ্য সচিব মাহবুবুর রহমান।
দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য ঘাটতি কমাতে মার্কিন কোম্পানি বোয়িং থেকে বিমান কেনা এবং যুক্তরাষ্ট্র থেকে গম, তুলা ও তেল আমদানি বাড়ানোর প্রস্তাব করেছে ঢাকা।
বাণিজ্য সচিব মাহবুবুর রহমান বুধবার এএফপিকে বলেন, ‘আমরা পারস্পরিক বাণিজ্য চুক্তির একটি খসড়া চূড়ান্ত করেছি। সরকার উভয় পক্ষের জন্য লাভজনক একটি চুক্তিতে পৌঁছাতে আশাবাদী।’
এদিকে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটনে বাংলাদেশ দূতাবাসে নিযুক্ত প্রেস মিনিস্টার গোলাম মোর্তোজা বলেন, ‘আজকে (বৃহস্পতিবার) ওয়াশিংটন সময় সকালে সাড়ে ১১টায় (বাংলাদেশ সময় রাত সাড়ে ৯টায়) শুল্ক কমানোর বিষয়ে বাংলাদেশ ও ইউএসটিআর-এর মধ্যে বৈঠক হবে। বেশ কিছুদিন ধরে নিয়মিত এ ধরনের বৈঠক হচ্ছে।’ ইউএসটিআর মানে হলো ইউনাইটেড স্টেটস ট্রেড রিপ্রেজেন্টেটিভ।
বর্তমানে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক রফতানির ২০ শতাংশের গন্তব্য যুক্তরাষ্ট্র। বাংলাদেশের মোট রফতানির প্রায় ৮০ শতাংশই টেক্সটাইল ও পোশাক শিল্প থেকে আসে। এই খাতটি পুনর্গঠনের প্রক্রিয়ায় রয়েছে, বিশেষ করে গত বছর ছাত্রদের নেতৃত্বে সরকারের পতনের পর।
ট্রাম্প গত ২ এপ্রিল বাংলাদেশের পণ্যের ওপর ৩৭ শতাংশ শুল্ক আরোপের ঘোষণা দেন, যা কটন বা তুলাজাত পণ্যের ওপর আগে থেকেই থাকা ১৬ শতাংশের দ্বিগুণেরও বেশি।
তবে তিনি শুল্ক কার্যকর করার সময় ৯ জুলাই পর্যন্ত স্থগিত রেখেছেন, যেমনটি তিনি অন্যান্য বৈশ্বিক বাণিজ্য অংশীদারদের ক্ষেত্রেও করেছেন, যদিও একটি প্রাথমিক ১০ শতাংশ শুল্ক বহাল রাখা হয়েছে।
বাংলাদেশ ২০২৪ সালে যুক্তরাষ্ট্রে ৮.৩৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের পণ্য রফতানি করেছে, যেখানে সেখান থেকে আমদানি হয়েছে ২.২১ বিলিয়ন ডলারের পণ্য। বাংলাদেশ ব্যাংক এবং জাতীয় রাজস্ব বোর্ড থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।
বাণিজ্য সচিব জানান, ‘বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর উদ্যোগের অংশ হিসেবে সরকার যুক্তরাষ্ট্র থেকে ইতোমধ্যে বিপুল পরিমাণে গম, ১৪টি বোয়িং বিমান, তুলা এবং আরো তেল ও গ্যাস কেনার পরিকল্পনা করেছে।’
তিনি প্রস্তাবিত চুক্তিগুলোর সুনির্দিষ্ট সময় বা পরিমাণ সম্পর্কে বিস্তারিত জানাননি। তবে বলেছেন, একটি চুক্তিতে পৌঁছানোর লক্ষ্যে সরকার এখন পর্যন্ত প্রায় ২৮টি বৈঠক ও দলিল আদান-প্রদান করেছে।
সূত্র : ডয়চে ভেলে