২০২৩ সালে যেসব আলেমদের হারিয়েছি

টুডেনিউজ বিডি ডটনেট

২০২৩ সালের শেষ লগ্নে যখন আমরা ইংরেজি নববর্ষের আগমনকে স্বাগত জানাতে প্রস্তুত, তখন এই বছরটি বিদায় নিচ্ছে একাধিক শোকাবহ মুহূর্তের মধ্য দিয়ে। সুখ-দুঃখ, হাসি-কান্না, আনন্দ-উৎসবের নানা উপাখ্যানের পাশাপাশি আমাদের হৃদয়ে গভীর শোকের ছায়া ফেলেছে দেশের প্রখ্যাত আলেমদের পরলোকগমন। এই প্রতিবেদনটিতে ২০২৩ সালে মৃত্যুবরণ করা কিছু মহান আলেমদের স্মৃতিচারণ করা হলো (মৃত্যু তারিখ অনুযায়ী)।

১৪ জানুয়ারি ২০২৩
পটিয়া মাদরাসার প্রবীণ মুহাদ্দিস মাওলানা মুহাম্মদ রফীক আহমদ

২০২৩ সালের প্রথম মাসেই চট্টগ্রামের পটিয়া মাদরাসার প্রখ্যাত মুহাদ্দিস মাওলানা মুহাম্মদ রফীক আহমদ ইন্তেকাল করেন। ৮৩ বছর বয়সে তিনি চট্টগ্রামের পটিয়া মাদরাসায় শিক্ষকতার দায়িত্ব পালনকালে হাদিস ও তাফসিরের মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলোতে অসংখ্য শিক্ষার্থীদের আলোকিত করেছেন। তিনি তাঁর জীবদ্দশায় অনেক গুরুত্বপূর্ণ রচনা রেখে গেছেন, যার মধ্যে “ইফাদাতুল মুসলিম”, “ইজাহুল মিশকাত” এবং “জাহরুন নুজুম” অন্যতম। তিনি প্রাতিষ্ঠানিক ও পাঠ্যক্রমিক ক্ষেত্রে গভীর প্রতিভার অধিকারী ছিলেন।

১৫ জানুয়ারি ২০২৩
আরজাবাদ মাদরাসার প্রবীণ শিক্ষক হাফেজ আব্দুল হামিদ

মাওলানা মুহাম্মদ রফীক আহমদের পরদিন, ১৫ জানুয়ারি, ঢাকার ঐতিহ্যবাহী জামিয়া হোসাইনিয়া ইসলামিয়া আরজাবাদ মাদরাসার হিফজ বিভাগের প্রবীণ শিক্ষক হাফেজ আব্দুল হামিদ ইন্তেকাল করেন। তিনি দীর্ঘ চার দশক ধরে শিক্ষা ও ধর্মীয় তত্ত্বাবধানের দায়িত্ব পালন করেছেন এবং তাঁর শিক্ষকতার মাধ্যমে বহু ছাত্র-ছাত্রী কোরআনের জ্ঞান অর্জন করেছেন। তাঁর কর্মজীবন শুরু হয় ১৯৯৮ সালে ঢাকার বাইতুস সালাম হাফিজিয়া মাদরাসায় শিক্ষকতা দিয়ে।

১৭ জানুয়ারি ২০২৩
শিলালিপি গবেষক ও ভাষাবিদ মাওলানা মুহাম্মদ নুরুদ্দিন ফতেহপুরী

১৭ জানুয়ারি ২০২৩, শিলালিপি গবেষক, ভাষাবিদ এবং স্থাপত্যবিদ্যার অন্যতম শীর্ষস্থানীয় বিশেষজ্ঞ মাওলানা মুহাম্মদ নুরুদ্দিন ফতেহপুরী ইন্তেকাল করেন। তিনি দীর্ঘকাল ধরে বিভিন্ন শিলালিপি খোদাইয়ের পাঠ উদ্ধার করতেন এবং ঢাকার স্থাপত্য বিষয়ক গ্রন্থ প্রকাশনায় অবদান রেখেছিলেন। তাঁর রচিত গ্রন্থগুলির মধ্যে “বিন্দুবিহীন বর্ণে মহানবী (সা.)” এবং “শেখ সাদির কাব্য ‘কারিমা’” প্রভৃতি উল্লেখযোগ্য।

২৩ জানুয়ারি ২০২৩
কুমিল্লার দয়াপুর মাদরাসার প্রতিষ্ঠাতা মাওলানা সালেম

কুমিল্লার দয়াপুর মাদরাসার প্রতিষ্ঠাতা মাওলানা সালেম ২৩ জানুয়ারি ২০২৩ তারিখে ঢাকায় মৃত্যুবরণ করেন। তিনি বাংলাদেশের নিটওয়্যার শিল্পের একজন পথিকৃৎ এবং অনেক মাদরাসা ও মসজিদ প্রতিষ্ঠা করেছেন। মাওলানা সালেম ছিলেন সমাজসেবক, শিল্পপতি, মুহাদ্দিস ও সংগঠক। তাঁর অবদান ছিল দেশের ধর্মীয় শিক্ষার উন্নয়ন এবং নানা সামাজিক উদ্যোগে।

২৭ জানুয়ারি ২০২৩
সাবেক এমপি আল মারকাজুল ইসলামীর প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান মুফতি শহিদুল ইসলাম

২৭ জানুয়ারি ২০২৩ তারিখে নড়াইল-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও আল মারকাজুল ইসলামীর প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান মুফতি শহিদুল ইসলাম ইন্তেকাল করেন। তিনি ৬৩ বছর বয়সে দীর্ঘ অসুস্থতার পর শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। তাঁর প্রতিষ্ঠিত সংস্থা আল মারকাজুল ইসলামী করোনাকালীন সময়ে মৃতদের দাফন ও সৎকার কার্যক্রমে ব্যাপক প্রশংসিত হয়েছিল। তিনি ইসলামিক শিক্ষার প্রসারে এবং সমাজে ইসলামী মূল্যবোধ প্রতিষ্ঠায় নিবেদিত ছিলেন।

৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৩
বেফাকের সিনিয়র কর্মকর্তা মাওলানা আব্দুস সামাদ

৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, বাংলাদেশ কওমি মাদরাসা শিক্ষাবোর্ড বেফাকের সিনিয়র কর্মকর্তা মাওলানা আব্দুস সামাদ হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে ইন্তেকাল করেন। তিনি বেফাকের তালিম তরবিয়াত বিভাগের সহকারী পরিচালক হিসেবে দীর্ঘদিন নিষ্ঠা ও আস্থার সঙ্গে কাজ করেছেন। তাঁর অকাল প্রয়াণে বেফাক পরিবার শোকাভিভূত।

২১ ফেব্রুয়ারি ২০২৩
মাধবপুর খরকি মাদরাসার মুহতামিম আল্লামা হারুনুর রশিদ

২১ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, মাধবপুর খরকি মাদরাসার মুহতামিম আল্লামা হারুনুর রশিদ ইন্তেকাল করেন। তিনি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাদিয়াতুল কোরআনের প্রতিষ্ঠাতা আব্দুল ওয়াহাব ভূইয়া রহ. এর জামাতা এবং শাস্ত্রীয় বিদ্যায় প্রগাঢ় পাণ্ডিত্য অর্জন করেছিলেন। তিনি প্রায় ৫০ বছর ধরে মাধবপুর মাদরাসায় সফলভাবে নেতৃত্ব দিয়ে গেছেন।

এবং আরও অনেক আলেমের মৃত্যুর মধ্য দিয়ে ২০২৩ সালটি বিদায় নিয়েছে। তাদের কর্ম ও শিক্ষা দেশব্যাপী আলোকিত থাকবে, এবং তাদের অবদান আগামী প্রজন্মের জন্য একটি মূল্যবান দিশা হিসেবে থাকবে।

২৭ মার্চ ২০২৩
হাটহাজারী মাদরাসার প্রবীণ শিক্ষক মাওলানা মুমতাজুল করিম ‘বাবা হুজুর’

বিগত কয়েক বছরে হাটহাজারী মাদরাসার প্রবীণ শিক্ষক মাওলানা মুমতাজুল করিম ‘বাবা হুজুর’-এর ইন্তেকাল নিয়ে গুজব ছড়ালেও ২০২৩ সালের ২৭ মার্চ (সোমবার) তিনি মহান রবের ডাকে সাড়া দেন। মৃত্যুকালে তার বয়স ছিল ৮০ বছর। তিনি দীর্ঘ ৩৯ বছর (১৯৮৪-২০২৩) এই প্রতিষ্ঠানে শিক্ষকতার দায়িত্ব পালন করেছেন। মাওলানা মুমতাজুল করিম ১৯৪২ সালের ২৭ ডিসেম্বর কুমিল্লা জেলার সদর দক্ষিণ থানার ডুলিপাড়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি তাঁর শিক্ষাজীবন শুরু করেন এলাকাবাসীর কাছে বিখ্যাত বটগ্রাম হামিদিয়া মাদরাসায়। পরে ফেনী শর্শদি মাদরাসায় কিছুদিন পড়াশোনা করে তিনি দেশের অন্যতম ঐতিহ্যবাহী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান দারুল উলুম মঈনুল ইসলাম হাটহাজারী মাদরাসায় ভর্তি হন। পরবর্তীতে জামিয়া ইসলামিয়া পটিয়া মাদরাসা থেকে দাওরায়ে হাদিস সফলভাবে সমাপ্ত করেন। দাওরায়ে হাদিস শেষ করে তিনি উচ্চ শিক্ষার জন্য ১৯৬৩ সালে পাকিস্তানে যান এবং সেখানে জামিয়া আশরাফিয়া লাহোর থেকে তাফসির ও আরবি সাহিত্য বিষয়ে উচ্চতর ডিগ্রি লাভ করেন। ১৯৬৫ সালে তিনি বাংলাদেশে ফিরে আসেন এবং ময়মনসিংহের কাতলাসেন কাদেরিয়া কামিল মাদরাসায় মুহাদ্দিস হিসেবে যোগ দেন। ঐ বছরই তিনি বরিশালের ঐতিহ্যবাহী চরমোনাই মাদরাসায় মুহাদ্দিস হিসেবে যোগ দেন এবং মুসলিম শরিফের দরস দেওয়া শুরু করেন। পরবর্তীতে ঢাকা আশরাফুল উলুম বড়কাটারা মাদরাসায় সাত বছর মুহাদ্দিস হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন এবং তারপর চট্টগ্রামের পটিয়া মাদরাসায় নিয়োগ পান। পটিয়া মাদরাসায় তিনি সুনামের সাথে হাদিসের দরস দেন এবং এই সময়ে পটিয়া থেকে প্রকাশিত ‘মাসিক আত তাওহীদ’ পত্রিকার সম্পাদকের দায়িত্বও পালন করেন। ১৯৮৪ সালে তিনি দেশের ঐতিহ্যবাহী দ্বীনি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান দারুল উলুম মঈনুল ইসলাম হাটহাজারীতে শিক্ষক হিসেবে যোগদান করেন। হাটহাজারী মাদরাসায় তিনি অত্যন্ত সুনাম ও খ্যাতির সাথে হাদিসের দরস দেন এবং শিক্ষার্থীদের প্রতি তাঁর গভীর ভালোবাসা ও দরদ তাকে ‘বাবা হুজুর’ হিসেবে পরিচিত করে তোলে।

২৯ মার্চ ২০২৩
বেফাকের প্রধান প্রশিক্ষক মাওলানা শিব্বির আহমদ

হাটহাজারী মাদরাসার প্রবীণ শিক্ষক মাওলানা মুমতাজুল করিম ‘বাবা হুজুর’-এর ইন্তেকালের দুই দিন পর, ২৯ মার্চ (বুধবার), বাংলাদেশের কওমি মাদরাসা শিক্ষাবোর্ড বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়া বাংলাদেশের প্রধান প্রশিক্ষক, নোয়াখালীর প্রবীণ আলেম মাওলানা শিব্বির আহমদ ইন্তেকাল করেন। মৃত্যুকালে তার বয়স ছিল ৯০ বছর। তিনি তিন ছেলে ও এক মেয়ের জনক ছিলেন। আল্লামা শিব্বির আহমদ নোয়াখালীর ঐতিহ্যবাহী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান দারুল উলুম চরমুটুয়া মাদরাসার সদরুল মুদাররিস ছিলেন এবং দেশে শিক্ষক প্রশিক্ষণ বৃদ্ধির জন্য তাঁর বিশাল ভূমিকা ছিল।

২৭ মার্চ ২০২৩
হাটহাজারী মাদরাসার প্রধান মুফতি নূর আহমদ

২০২৩ সালের ২৭ মার্চ, হাটহাজারী মাদরাসার প্রবীণ শিক্ষক মাওলানা মুমতাজুল করিম ‘বাবা হুজুর’-এর ইন্তেকালের দিনেই, একই মাসে, ইন্তেকাল করেন প্রতিষ্ঠানের প্রধান মুফতি ও প্রবীণ মুহাদ্দিস আল্লামা নূর আহমদ। মৃত্যুকালে তার বয়স ছিল ৯০ বছর। মুফতি নূর আহমদ দীর্ঘকাল ধরে হাটহাজারী মাদরাসার আবাসন বিষয়ক প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন এবং শিক্ষাবিভাগীয় প্রধান হিসেবেও তাঁর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল। তিনি ছিলেন আল্লামা মুফতি ফয়জুল্লাহ (রহ.)-এর বিশেষ ছাত্র ও সর্বশেষ খলিফা। মুফতি নূর আহমদ ১৯৩৮ সালে চট্টগ্রামের বাঁশখালী উপজেলার এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ১৯৬০ সালে হাটহাজারী মাদরাসা থেকে দাওরায়ে হাদীস সম্পন্ন করেন এবং প্রায় আড়াই বছর আল্লামা মুফতি ফয়জুল্লাহ (রহ.)-এর সান্নিধ্যে ফিকাহ ও ফতোয়া বিষয়ে গভীর পাণ্ডিত্ব অর্জন করেন।

২৭ মার্চ ২০২৩
জিরি মাদরাসার প্রবীণ মুহাদ্দিস মাওলানা আহমদ উল্লাহ কাসেমী

হাটহাজারী মাদরাসার প্রধান মুফতি নূর আহমদের ইন্তেকালের দিনে, ২৭ মার্চ সকাল ১১ টায়, চট্টগ্রামের আগ্রাবাদের একটি হাসপাতালে, তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। মৃত্যুকালে তার বয়স ছিল ৯৮ বছর। তিনি ছিলেন চট্টগ্রামের আরেক ঐতিহ্যবাহী দ্বীনি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান আলজামিয়াতুল ইসলামিয়া আরাবিয়া জিরির (জিরি মাদরাসা) প্রবীণ মুহাদ্দিস এবং বহু শীর্ষ আলেমের শিক্ষক। মাওলানা আহমদ উল্লাহ কাসেমী একজন সুদক্ষ শিক্ষক হিসেবে পরিচিত ছিলেন। দেশবরেণ্য আলেম আল্লামা শাহ তৈয়ব রাহমাতুল্লাহি আলাইহি, আল্লামা আবদুস সালাম চাটগামী রাহমাতুল্লাহি আলাইহি, এবং জামিয়া জিরির বর্তমান শাইখুল হাদিস মুসা সন্দীপী সহ বহু আলেম তাঁর ছাত্র ছিলেন। তিনি ১৯২৫ সালে পটিয়া উপজেলার হরিণ খাইন গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন।

৭ এপ্রিল ২০২৩
বেফাকের সাবেক মহাপরিচালক মাওলানা যোবায়ের আহমদ চৌধুরী

২০২৩ সালের শুরুর দিকে বেফাকের দুই দায়িত্বশীলের ইন্তেকালের পর, মহান রবের ডাকে সাড়া দেন প্রতিষ্ঠানটির সাবেক মহাপরিচালক মাওলানা যোবায়ের আহমদ চৌধুরী। তার ইন্তেকাল হয় ৭ এপ্রিল ২০২৩ রমজান মাসে, নারায়ণগঞ্জে একটি ইফতার মাহফিলে। মৃত্যুকালে তার বয়স ছিল ৭৩ বছর। মৃত্যুর আগে তিনি খেলাফত মজলিসের আমির হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন। এছাড়া তিনি বিভিন্ন মাদ্রাসায় শায়খুল হাদিস ও মুহাদ্দিস পদে হাদিসের দরস দিতেন এবং মৌলভীবাজার সরকারি কলেজেও অধ্যাপনা করতেন। মাওলানা যোবায়ের আহমদ চৌধুরী ১৯৫০ সালের ১ ডিসেম্বর মৌলভীবাজার শহরে জন্মগ্রহণ করেন।

২১ এপ্রিল ২০২৩
আল্লামা ফরিদপুরী রহ.-এর সর্বশেষ খলিফা মাওলানা আশরাফ আলী

ফরিদপুরের অন্যতম প্রবীণ আলেম এবং আল্লামা শামছুল হক ফরিদপুরী রহ.-এর সর্বশেষ খলিফা মাওলানা আশরাফ আলী ২১ এপ্রিল, ২৯ রমজান, ইন্তেকাল করেন। মৃত্যুকালে তার বয়স ছিল অন্তত ১১০ বছর। মাওলানা আশরাফ আলী ‘বড় হুজুর’ নামে পরিচিত ছিলেন। তিনি ফরিদপুরের ঐতিহ্যবাহী দ্বীনি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান জামিয়া ইসলামিয়া আজিজিয়া বাহিরদিয়ার সাবেক মুহতামিম এবং মৃত্যুর আগ পর্যন্ত জামিয়া ইসলামিয়া আসলিয়া বাহিরদিয়ার প্রতিষ্ঠাতা মুহতামিম হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন।

১০ মে ২০২৩
ফরিদপুরের নিজামুল উলুম মাদরাসার মুহতামিম মাওলানা জহুরুল হক

ফরিদপুরের আরেক প্রসিদ্ধ আলেম, মুফাসসিরে কোরআন এবং আল জামিয়াতুল ইসলামিয়া নিজামুল উলুম পুরুরা মাদরাসার প্রিন্সিপাল মাওলানা জহুরুল হক ১০ মে (বুধবার) ইন্তেকাল করেন। তিনি দীর্ঘদিন ধরে এই মাদরাসার দায়িত্ব পালন করেছিলেন। মৃত্যুকালে তার বয়স আনুমানিক ৯৫ বছর ছিল।

১৭ মে ২০২৩
হাইয়াতুল উলয়ার সদস্য ও সিলেটের প্রবীণ আলেম মুহিব্বুল হক গাছবাড়ী

১৭ মে (বৃহস্পতিবার) সিলেটের প্রবীণ আলেম, জামেয়া কাসিমুল উলুম দরগাহ মাদরাসার মুহতামিম, শায়খুল হাদিস এবং প্রধান মুফতি মাওলানা মুহিব্বুল হক গাছবাড়ী ইন্তেকাল করেন। তিনি দেশের অন্যতম প্রবীণ এই আলেম সম্মিলিত কওমি মাদ্রাসা শিক্ষাবোর্ড আল হাইয়াতুল উলয়ার সদস্য, পরীক্ষা নিয়ন্ত্রণ কমিটির সদস্য, সিলেটের বিভিন্ন ধর্মীয় সংগঠনের চেয়ারম্যান এবং খাদিমুল কুরআন পরিষদের সভাপতি ছিলেন।

২৭ মে ২০২৩
উস্তাদুল হুফফাজ হাফেজ নুরুজ্জামান

প্রখ্যাত উস্তাদুল হুফফাজ, হাফেজ নুরুজ্জামান ২৭ মে (শনিবার) ইন্তিকাল করেন। তিনি ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও হবিগঞ্জ জেলার ঐতিহ্যবাহী দ্বীনি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, হবিগঞ্জের মাধবপুরের জামিয়া ইসলামিয়া দারুল উলুম ইসলামিয়া হরষপুর মাদ্রাসার হিফজ বিভাগের প্রধান হিসেবে দীর্ঘ ৫০ বছর অধিককাল দায়িত্ব পালন করেন। হরষপুরের হাফেজ সাহেব হুজুর নামে পরিচিত এই আলেম, ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও হবিগঞ্জ এলাকার বহু আলেম-ওলামার শিক্ষাগুরু ছিলেন। তার ছাত্রদের মধ্যে মুফতি আজম আল্লামা মুফতি নুরুল্লাহ এবং আল্লামা তাফাজ্জল হক হবিগঞ্জী সহ আরও অনেক বিশিষ্ট ব্যক্তির নাম অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। তিনি দুই পুত্র, মুফতি হাসান জুনায়েদ ও সাংবাদিক সালমান তারেক শাকিল এবং এক কন্যা জামাতাসহ অসংখ্য ছাত্র, গুণগ্রাহী ও মুহিব্বীন রেখে যান।

২ জুন ২০২৩
হাটহাজারী মাদরাসার মহাপরিচালক আল্লামা ইয়াহইয়া

চট্টগ্রামের হাটহাজারী দারুল উলুম মঈনুল ইসলাম মাদরাসার মহাপরিচালক ও হেফাজতে ইসলামের সিনিয়র নায়েবে আমির আল্লামা শাহ মুহাম্মাদ ইয়াহইয়া ২ জুন (শুক্রবার) ইন্তিকাল করেন। তিনি ২০২১ সালের ৮ সেপ্টেম্বর হাটহাজারী মাদরাসার মহাপরিচালক হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেছিলেন। এর আগে, মাদরাসার মহাপরিচালক ছিলেন হেফাজতের কেন্দ্রীয় আমির, শাহ আহমদ শফী। ২০২০ সালে আহমদ শফী মৃত্যুবরণ করার পর মাদরাসার প্রশাসনিক দায়িত্বে পরিবর্তন আসে। আল্লামা ইয়াহইয়া তার পেশাগত জীবনে ধর্মীয় শিক্ষার ক্ষেত্রে অবদান রাখেন এবং মাদরাসা ব্যবস্থাপনায় তার ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ছিল।

২৫ জুন ২০২৩
শেখ জনূরুদ্দীন রহ. মাদরাসার মুহাদ্দিস মাওলানা রেদওয়ান আল হাবিব

রাজধানীর চৌধুরীপাড়া মসজিদ-ই-নূরের সাবেক ইমাম ও শেখ জনূরুদ্দীন রহ. মাদরাসার মুহাদ্দিস মাওলানা রেদওয়ান আল হাবিব ২৫ জুন ইন্তিকাল করেন। তিনি ফেনীর মুন্সিরহাট দারুল উলুম মাদরাসার মুহতামিম হিসেবেও পরিচিত ছিলেন।

১৪ আগস্ট ২০২৩
মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী

জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির, মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী ১৪ আগস্ট (সোমবার) মৃত্যুবরণ করেন। তিনি হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ইন্তিকাল করেন। ২০১০ সালের ২৯ জুন ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দেওয়ার অভিযোগে গ্রেপ্তার হওয়ার পর, মুক্তিযুদ্ধের সময় মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে তাকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়, তবে পরবর্তীতে তা কমিয়ে আমৃত্যু কারাদণ্ডে রূপান্তরিত হয়। দীর্ঘ ১৩ বছর কারাবন্দী থাকার পর তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।

১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৩
ময়মনসিংহের প্রবীণ আলেম মুফতি ফজলুল হক

ময়মনসিংহের প্রখ্যাত আলেম মুফতি ফজলুল হক ১৬ সেপ্টেম্বর (শনিবার) ইন্তিকাল করেন। তিনি আলিয়া মাদ্রাসায় কামিল পাস করে, ভারতের দারুল উলুম দেওবন্দে শিক্ষা লাভ করেন এবং তার জীবনে অনেক শিক্ষার্থীদের জন্য অনুপ্রেরণা হিসেবে কাজ করেছেন। তিনি বহু মাদ্রাসার শিক্ষক এবং খতিব হিসেবে কাজ করেছেন।

২ নভেম্বর ২০২৩
প্রফেসর হজরত মুহাম্মাদ হামীদুর রহমান

বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) সাবেক সহকারী অধ্যাপক প্রফেসর মুহাম্মাদ হামীদুর রহমান ২ নভেম্বর ২০২৩ (বৃহস্পতিবার) ইন্তিকাল করেন। তিনি ‘প্রফেসর হজরত’ নামে বিশেষভাবে পরিচিত ছিলেন। তিনি ১৯৭৪ সালে হাফেজ্জী হুজুর (রহ.)-এর কাছে বায়াত গ্রহণ করেন এবং পরে তার খলিফা হন।

২৯ নভেম্বর ২০২৩
ফরিদাবাদ মাদরাসার প্রবীণ মুহাদ্দিস মাওলানা আব্দুল গণী

জামিয়া আরাবিয়া ইমদাদুল উলুম ফরিদাবাদ মাদরাসার সিনিয়র মুহাদ্দিস মাওলানা আব্দুল গণী ২৯ নভেম্বর ইন্তিকাল করেন। তিনি দীর্ঘদিন ধরে ক্যান্সারে আক্রান্ত ছিলেন এবং ভারতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ছিলেন।

৭ ডিসেম্বর ২০২৩
গওহরডাঙ্গা মাদরাসার শায়খুল হাদিস মাওলানা আবদুর রউফ

গওহরডাঙ্গা মাদরাসার শায়খুল হাদিস মাওলানা আবদুর রউফ ৭ ডিসেম্বর (বৃহস্পতিবার) ইন্তিকাল করেন। তিনি বাংলাদেশের বিভিন্ন মাদরাসায় বুখারী শরীফের দরস প্রদান করতেন এবং তার বিদ্যাবিভরিত জীবন সমাজে বহু শিক্ষার্থীকে প্রভাবিত করেছে।

৩০ ডিসেম্বর ২০২৩
চাঁদপুর এমদাদিয়া মাদরাসার সাবেক মুহতামিম মাওলানা আব্দুর রশীদ

চাঁদপুর এমদাদিয়া মাদরাসার সাবেক মুহতামিম, মাওলানা আব্দুর রশীদ ৩০ ডিসেম্বর (শনিবার) ইন্তিকাল করেন। তিনি দীর্ঘকাল চাঁদপুরে ইসলামি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অবদান রেখেছিলেন এবং তার মৃত্যু, পুরো চাঁদপুর অঞ্চলে গভীর শোকের সৃষ্টি করেছে।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *


Scroll to Top