টুডেনিউজ বিডি ডটনেট
মাত্র তিন সপ্তাহেরও কম সময়ে ইয়েমেনে হাউছিদের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্র প্রায় ১ বিলিয়ন ডলার ব্যয় করেছে। কিন্তু এত বড় খরচের পরও বিদ্রোহী গোষ্ঠীটির বিরুদ্ধে বিশেষ কোনো সফলতা দেখা যায়নি।
১৫ মার্চ শুরু হওয়া অভিযানে ব্যবহৃত হয়েছে অনেক দামী দামী অস্ত্র। এর মধ্যে রয়েছে জেএসএসএম দূরপাল্লার ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র, জেএসওডব্লিউ গ্লাইড বোমা এবং টোমাহক ক্ষেপণাস্ত্র। ডিয়েগো গার্সিয়া থেকে পাঠানো হয়েছে বি-২ বোমারু বিমান। শিগগির আরো ফাইটার স্কোয়াড্রন, একটি বিমানবাহী রণতরী ও বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা মোতায়েন করা হবে।
এত ব্যয়ের কারণে পেন্টাগনকে কংগ্রেসের কাছে অতিরিক্ত তহবিল চাইতে হতে পারে। তবে এটি পাওয়া কঠিন হতে পারে। কারণ এই অভিযান নিয়ে বিতর্ক রয়েছে। ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্সও বলেছেন, তিনি এই অভিযানকে ‘একটি ভুল সিদ্ধান্ত’ মনে করেন।
পেন্টাগন এখনো জানায়নি, প্রতিদিনের হামলা হাউছিদের উপর কী প্রভাব ফেলছে। সাম্প্রতিক কংগ্রেস ব্রিফিংয়ে জানানো হয়েছে, কিছু হাউছি নেতা নিহত হয়েছে এবং কিছু সামরিক স্থাপনা ধ্বংস হয়েছে। তবে হাউছিরা এখনো ভূগর্ভস্থ বাঙ্কার ও অস্ত্র মজুদ রাখতে পারছে।
এক কর্মকর্তা জানান, ‘কিছু লক্ষ্য ধ্বংস হয়েছে। কিন্তু হাউছিদের জাহাজে হামলা চালানো বা ড্রোন ভূপাতিত করার ক্ষমতা কমেনি।’ এরই মধ্যে তারা একটি এমকিউ-৯ রিপার ড্রোন ভূপাতিত করেছে। এটি গত মাসে শুরু হওয়া অভিযানের পর দ্বিতীয় ঘটনা।
তবে একটি ইতিবাচক দিক হলো, গত সপ্তাহে ইসরাইলের দিকে হাউছিদের ক্ষেপণাস্ত্র হামলা কমেছে। এক কর্মকর্তা বলেন, মার্কিন বোমাবর্ষণের ফলে হাউছিদের যোগাযোগ করা ও আঘাত হানা কঠিন হয়ে পড়েছে। তারা এখন অনেকটাই আত্মগোপনে।
এখন সেন্টকম কমান্ডারদের আর হোয়াইট হাউস থেকে অনুমোদন নিতে হয় না। তারা সরাসরি হামলার সিদ্ধান্ত নিতে পারেন। এই নীতি ট্রাম্প আমলের মতো, যেখানে সামরিক কমান্ডারদের বেশি স্বাধীনতা ছিল।
হামলায় নিহত হাউছি নেতাদের বেশিরভাগই ছিলেন মধ্যম স্তরের। তবে হাউছিদের ড্রোন কার্যক্রম পরিচালনাকারী এক শীর্ষ কর্মকর্তা নিহত হয়েছেন। আরো একটি হামলায় তাদের একটি বৈঠকের জায়গা ধ্বংস হয়েছে। অনেকে দাবি করেছেন, সেটি একটি বেসামরিক ভবন ছিল। তবে প্রতিরক্ষা কর্মকর্তারা বলছেন, সেটি একটি সামরিক লক্ষ্য ছিল এবং বেসামরিক ক্ষয়ক্ষতি কমাতে সবরকম চেষ্টা করা হয়েছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এত ব্যয়সাপেক্ষ এই অভিযানে হাউছিদের শক্তি কিছুটা হলেও টিকে আছে। তারা এখনো হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। ফলে প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে—এই অভিযান আসলে কতটা কার্যকর?
সূত্র : সিএনএন