কাশ্মীরে পর্যটকদের উপর সন্ত্রাসী হামলা

কাশ্মীরে পর্যটকদের উপর সন্ত্রাসী হামলা, নিহত ২৬

কাশ্মীরে পর্যটকদের উপর সন্ত্রাসী হামলায় অন্তত ২৬ জন নিহত হয়েছে। মঙ্গলবার এনডিটিভির এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জম্মু ও কাশ্মীরের পহেলগামে পর্যটকদের উপর ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলায় প্রাণ হারিয়েছেন ২৬ জন। বৈসরন উপত্যকার তৃণভূমিতে আজকের এই হামলাকে সাম্প্রতিক সময়ের সবচেয়ে মর্মান্তিক ঘটনা হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে। এই হামলার প্রেক্ষিতে কাশ্মীরজুড়ে শোক ও আতঙ্ক বিরাজ করছে।

উত্তরাখণ্ডে ১৭০টির বেশি মাদরাসা সিলগালা

কাশ্মীরে পর্যটকদের উপর সন্ত্রাসী হামলা

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, কাশ্মীরে পর্যটকদের উপর সন্ত্রাসী হামলা হয়েছে। এ সময় পাহাড়ঘেরা অঞ্চলে সন্ত্রাসীরা হঠাৎ করে বন থেকে বেরিয়ে এসে নির্বিচারে গুলি চালায়। অনেকে মাটিতে পড়ে থাকেন নিশ্চল অবস্থায়, আর আশপাশে চিৎকার করে সাহায্য চাইছিলেন আহত নারী-পুরুষেরা। দুর্গম অঞ্চলে দ্রুত উদ্ধারকাজ চালাতে মোতায়েন করা হয়েছে সামরিক হেলিকপ্টার।

নিহত ও আহতদের পরিচয়

কাশ্মীরে পর্যটকদের উপর সন্ত্রাসী হামলায় নিহতদের মধ্যে রয়েছেন মহারাষ্ট্রের দিলীপ ডিসলে ও অতুল মোনে এবং কর্ণাটকের শিবমোগা জেলার এক রিয়েল এস্টেট ব্যবসায়ী, যাকে তার পরিবারের সামনেই গুলি করে হত্যা করা হয়। আরও দু’জন পর্যটক আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছেন মহারাষ্ট্রের উপ-মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফড়নবিশ। কর্ণাটকের মুখ্যমন্ত্রী সিদ্দারামাইয়া উচ্চপর্যায়ে জরুরি বৈঠক করেছেন।

জরুরি পদক্ষেপ ও তদন্ত

ঘটনার পরপরই স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ দিল্লিতে তার বাসভবনে জরুরি বৈঠক ডাকেন, যেখানে উপস্থিত ছিলেন গোয়েন্দা ব্যুরোর প্রধান তপন ডেকা, স্বরাষ্ট্র সচিব গোবিন্দ মোহন এবং শীর্ষ নিরাপত্তা কর্তারা। পরে তিনি শ্রীনগরে পৌঁছে নিরাপত্তা পর্যালোচনার জন্য বৈঠক করেন এবং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে পরিস্থিতি সম্পর্কে অবহিত করেন।

প্রতিক্রিয়া ও নিন্দা

কাশ্মীরে পর্যটকদের উপর সন্ত্রাসী হামলায় প্রধানমন্ত্রী মোদী হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়ে বলেন, “সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের সংকল্প আরও দৃঢ় হবে।”

লেফটেন্যান্ট গভর্নর মনোজ সিনহা বলেন, “এই কাপুরুষোচিত হামলার পিছনে যারা রয়েছে, তাদের কঠোর শাস্তি দেওয়া হবে।”

তিনি আহতদের দ্রুত চিকিৎসা নিশ্চিত করার নির্দেশ দিয়েছেন।

ওমর আবদুল্লাহ এই হামলাকে “ঘৃণ্য” ও “অবিশ্বাস্যরকম হতবাক করা” বলে বর্ণনা করেছেন।
মেহবুবা মুফতি বলেন, “কাশ্মীর ঐতিহাসিকভাবে পর্যটকদের উষ্ণভাবে গ্রহণ করেছে – এ ধরনের হামলা গভীর উদ্বেগের।”

পর্যটন মৌসুমে আঘাত

এই হামলার সময় জম্মু ও কাশ্মীরে পর্যটন মৌসুম চলছে এবং আসন্ন অমরনাথ যাত্রার প্রস্তুতিও চলমান। ৩৮ দিনের এই যাত্রা শুরু হবে ৩ জুলাই, যার একটি রুট পহেলগাম থেকে। কাশ্মীরের পর্যটন খাত, যা অতীতে সন্ত্রাসবাদের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, পুনরুদ্ধারের মাঝপথে এই হামলা নতুন করে শঙ্কা সৃষ্টি করেছে।

২০১৯ সালের পুলওয়ামার পর সবচেয়ে বড় হামলা

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ২০১৯ সালের পুলওয়ামা হামলার পর এটিই সবচেয়ে বড় ও নৃশংস হামলা। সে সময় ৪০ জন সিআরপিএফ জওয়ান নিহত হয়েছিলেন। এবার লক্ষ্য ছিল নিরস্ত্র পর্যটক – যা পরিস্থিতিকে আরও গভীরভাবে উদ্বেগজনক করে তুলেছে।

সূত্র : এনডিটিভি

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *


Scroll to Top