ইসলাম ধর্ম শিক্ষক, প্রাথমিক বিদ্যালয়, সঙ্গীত শিক্ষক, তৃতীয় লিঙ্গ, ট্রান্সজেন্ডার, গানের শিক্ষক,

ইসলাম ধর্ম শিক্ষক উপেক্ষিত, অগ্রাধিকার পেল সঙ্গীত ও তৃতীয় লিঙ্গ কোটা

ড. সরোয়ার হোসেন

আমরা গভীর উদ্বেগের সাথে লক্ষ্য করছি যে সরকার একদিকে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ইসলাম ধর্ম শিক্ষক নিয়োগে জনগণের দীর্ঘদিনের দাবীকে উপেক্ষা করে অযাচিতভাবে সঙ্গীত শিক্ষক নিয়োগের ঘোষণা প্রদান করেছে, অন্যদিকে কোটার ভিত্তিতে তৃতীয় লিঙ্গ তথা (সমআকামী) ট্রান্সজেন্ডারদের প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষক হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে। আমরা অবিবেচনাপ্রসূত এই সিদ্ধান্তের তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি।

দেশে ৬৫ হাজার ৫০০+ সরকারি প্রাথমিক স্কুলে ৩.৫ লক্ষ শিক্ষক। প্রতিস্কুলে প্রায় ৫ জন শিক্ষক। গানের শিক্ষকের কোটা স্কুল ভেদে ১৫-২০ শতাংশ.

সম্প্রতি ওয়েভ ফাউন্ডেশনের জরিপে দেখা গেছে, দেশের প্রাথমিক শিক্ষায় ভয়াবহ সংকট বিদ্যমান। প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থীদের মধ্যে—
১০.২৮ শতাংশ ছেলে ও ৮.৭১ শতাংশ মেয়ে বাংলা বইয়ের একটি বর্ণও পড়তে পারে না।
১৩.৬২ শতাংশ শিশু এক অঙ্কের সংখ্যা পর্যন্ত চিনতে অক্ষম।
১৬.৭৮ শতাংশ ছেলে ও ১৫.২২ শতাংশ মেয়ে ইংরেজি বইয়ের একটি বর্ণও পড়তে পারে না।

এই ভয়াবহ চিত্র প্রমাণ করে যে, প্রাথমিক স্তরে মৌলিক শিক্ষা (বাংলা, ইংরেজি ও গণিত) অর্জনই এখন সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। অথচ এই অবস্থায় সরকার প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সঙ্গীত শিক্ষক নিয়োগ দিচ্ছে এবং সাম্প্রতিক গেজেট অনুযায়ী সরকারি নিয়োগে ১ শতাংশ কোটা শারীরিক প্রতিবন্ধী ও ‘তৃতীয় লিঙ্গ’ প্রার্থীদের জন্য সংরক্ষণ করেছে।

উল্লেখ্য যে, ৬ অক্টোবর ২০২৪ সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মো. শহিদুল ইসলাম মিলন দেশের সব সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ধর্মীয় শিক্ষকের পদ সৃষ্টি করে নিয়োগ দেওয়ার ব্যবস্থা নিতে সরকারকে আইনি নোটিশ পাঠান। প্রাথমিক ও গণশিক্ষা সচিব, জনপ্রশাসন সচিব, অর্থ সচিব এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালককে এ নোটিশ পাঠানো হয়। বিগত একবছরেও সরকার এই বিষয়ে কোন উদ্যোগ গ্রহণ করেনি।

আমরা মনে করি, মৌলিক শিক্ষায় যখন ভয়াবহ ঘাটতি, তখন সঙ্গীতের শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া শিক্ষানীতির সাথে সাংঘর্ষিক এবং অগ্রাধিকারভিত্তিক জাতীয় স্বার্থবিরোধী।

বাংলাদেশের ৯২ শতাংশ মুসলিম জনগোষ্ঠী থাকা সত্ত্বেও প্রাথমিক স্তরে ইসলাম শিক্ষার জন্য নির্দিষ্ট শিক্ষক নেই। অথচ সঙ্গীতের মতো বিষয়কে প্রাধান্য দিয়ে শিক্ষক নিয়োগ স্পষ্টতই জাতীয় চাহিদা ও সাংস্কৃতিক বাস্তবতার সাথে অসামঞ্জস্যপূর্ণ।

তৃতীয় লিঙ্গ কোটার মাধ্যমে শিক্ষাব্যবস্থায় বিতর্কিত সামাজিক এজেন্ডা চাপিয়ে দেওয়া হচ্ছে, যার আইনগত সংজ্ঞাও এখনো অস্পষ্ট। এটি শিক্ষাক্ষেত্রে নতুন দ্বন্দ্ব ও বিভাজন তৈরি করবে।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *


Scroll to Top